ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

রানা প্লাজা ট্রাজেডি: বিচারের অগ্রগতি কতদূর?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২০, ২৪ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১১:২৬, ২৪ এপ্রিল ২০২০

দেশের স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ গার্মেন্টস ট্রাজেডি রানা প্লাজা ধসের সাত বছর পূর্ণ হলো আজ। তবে ঘটনার দীর্ঘ এ সময় পেরিয়ে গেলেও সাক্ষ্যগ্রহণের অভাবে মূল মামলার বিচার শুরু হয়নি এখনও। 

জানা যায়, রানা প্লাজা ধসের সাত বছরে একজনেরও সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়নি। সাক্ষের জন্য তারিখ নির্ধারণ হলেও বারবার তা পেছানো হয়। যাতে মামলাটির বিচার কার্যক্রম স্থগিত রয়ে যায়। বর্তমানে আলোচিত এ মামলাটির কার্যক্রম নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। 

জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল চলাকালীন রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারে ভয়াবহ বিপর্যয়ে ঘটে রানা প্লাজার। যে ঘটনায় প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৪ জন পোশাক শ্রমিক। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। জীবিত উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। ওই ভবনের মালিক ছিলেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা সোহেল রানা। 

এ ঘটনায় ভবন নির্মাণে ‘অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’ মামলা দায়ের করেন তৎকালীন সাভার থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) ওয়ালী আশরাফ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে।

কিন্তু, কয়েকজন আসামির করা অবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিলে বন্ধ হয়ে যায় মামলাটির কার্যক্রম। এতে করে রাষ্ট্রপক্ষও সাক্ষ্য নিতে পারছে না। পাশাপাশি রিভিউশনে ইমরাত নির্মাণ আইনের মামলায় ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। আর এতে করেই এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি মামলাটি।

হত্যা মামলার বিষয়ে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খোন্দকার আব্দুল মান্নান গণামধ্যমকে বলেন, ‘অভিযোগ গঠনের পর কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে গিয়ে মামলাটি স্থগিত করেন। তাদের মধ্যে এখনও সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রেফাত উল্লাহ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলীর পক্ষে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ফলে বিচার প্রক্রিয়ার কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না।’

কয়েকজন আসামি অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিভিশন মামলা করেন। তাদের মধ্যে নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বজলুস সামাদ ও সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের রিভিশন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। অপরদিকে ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের রিভিশন মঞ্জুর করে অব্যাহতি দেয়া হয়। রিভিশনের বিষয়টি নিষ্পত্তি হলে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যাবে বলে জানান ইমারত নির্মাণ আইনে দায়ের করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির বাবুল। 

আর আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় প্রায় চার বছর আগে অভিযোগ গঠন হয়েছে। কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। তাদের পক্ষে স্থগিতাদেশ থাকায় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে না ‘

মামলায় রানা ছাড়া সবাই জামিনে আছেন। মামলায় কোন সাক্ষী হচ্ছে না আর আসামি রানাকে জামিনও দিচ্ছেন না আদালত।  দ্রুত স্থগিতাদেশ নিষ্পত্তি করে মামলার কার্যক্রম চালু করা উচিত বলেও জানান তিনি। 

এআই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি