ঢাকা, শনিবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাবিতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিন দেখা গেছে, আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাইন উদ্দিন ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়। এতে একপর্যায়ে উপ-উপাচার্যকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়।

এর আগে আজ বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার পোড়ান। এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাঁরা উপ-উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। এ সময় তাঁরা উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকান এবং সেখানে টাকা ছুড়ে মারেন।

এরপর তাঁরা উপ-উপাচার্য মাইন উদ্দিনের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে তিনি তাঁর বাসভবনে প্রবেশ করতে পারেননি।

পরবর্তীকালে মাইন উদ্দিন এবং প্রক্টর মাহবুবর রহমান জুবেরি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে তখন আবার বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক, উপ-উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়।

এই ধস্তাধস্তিতে শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। বর্তমানে শিক্ষার্থী ও উপ-উপাচার্য জুবেরি ভবনের ভেতরে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন।

ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের রক্তের ওপর এই প্রশাসন বসে আমাদের ওপরই হামলা চালায়। তারা রাকসুকে বানচাল করার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এই হামলার বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে প্রক্টর মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য স্যারকে অবরুদ্ধ করে তাঁর বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে আমরা জুবেরি ভবনের লাউঞ্জে বসি। সেখানে শিক্ষার্থীরা আবারও আমাদের বাধা দেয়। আমরা ফিরে গিয়ে পুনরায় আসার পর ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা আবারও বাধা দেয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ধাক্কাধাক্কির মধ্যেই আমার হাতের ঘড়ি ও সঙ্গে থাকা ১০ হাজার টাকা হারিয়ে যায়। ধাক্কাধাক্কি হতে পারে, কিন্তু আমার হাতের ঘড়ি ও ১০ হাজার টাকা হারিয়ে যাওয়া কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভর্তি কমিটির সভায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর পর থেকেই বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ঘোষণার পরপরই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলমান ছিল। এতে নতুন বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জোহা চত্বরে এক সমাবেশ করেন তাঁরা। এক ঘণ্টার বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম কাফনের কাপড় পরে এককভাবে আমরণ অনশনে বসেন। পরে আরও আটজন শিক্ষার্থী একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে যোগ দেন।

তাঁরা হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সজিবুর রহমান, সমাজকর্ম বিভাগের আরিফ আলভি, আবু রাহাদ ও সৈয়দ ইসপাহানী, ফলিত গণিত বিভাগের তৌফিকুল ইসলাম, আরবি বিভাগের রমজানুল মোবারক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাজমুল হক আশিক এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রেদোয়ান আহমেদ রিফাত।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি