ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

রুম্পার বন্ধু আটক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৫৫, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে সৈকত নামে তার এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে আটক করে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে রুম্পা মোবাইল ফোন, হাতঘড়ি, আংটি ও ভ্যানিটি ব্যাগ শান্তিবাগের বাসায় রেখে সিদ্ধেশ্বরী যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। পরিবারের দাবি, রুম্পা আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে নয়। সে সব সময় হাসিখুশি থাকত এবং মানুষকে হাসিখুশি দেখতেও পছন্দ করত।

শনিবারও রুম্পার মৃত্যুরহস্য উদ্‌ঘাটন এবং জড়িত ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ও ধানমন্ডি শাখার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।

গত বুধবার রাত ১১টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর ভবনের সামনে থেকে রুম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে লাশ অজ্ঞাত থাকায় পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় হত্যা মামলা করে। ৬৪/৪ নম্বর ভবনের নিচতলা ও তৃতীয় তলায় ছেলেদের মেস এবং দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন ভাড়াটেরা। রুম্পা ওই ভবনে গিয়েছিলেন কি-না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেটিও। এ ছাড়া পাশের আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের ১১ তলা ভবনের ছাদে স্যান্ডেলের ছাপ পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ৬৪/৪ নম্বর ভবনের গলিতে এক তরুণীকে প্রবেশের দৃশ্য দেখা গেছে। ছবিটি অস্পষ্ট হওয়ায় সেটি রুম্পা কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, মৃত্যুর বিষয়টির তিনটি আঙ্গিকে তদন্ত চলছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। রুম্পার মোবাইল ফোনে সর্বশেষ যেসব নম্বর থেকে কথা হয়েছে, যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে সেগুলো। সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু আলামত পাওয়া গেছে, সেগুলো মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।

রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন হবিগঞ্জে পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের বিজয়নগরে। তবে মা ও একমাত্র ভাইয়ের সঙ্গে রুম্পা থাকতেন রাজধানীর শাজাহানপুরের শান্তিবাগে। সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন তিনি। বুধবার শান্তিবাগে এক ছাত্রকে প্রাইভেট পড়িয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাসার সামনে যান। সেখানে দাঁড়িয়ে তার মাকে ফোন করে চাচাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম সুমনকে (১০) দিয়ে তার এক জোড়া স্যান্ডেল নিচে পাঠাতে বলেন। সুমন স্যান্ডেল নিয়ে এলে তিনি মোবাইল ফোন, আংটি, হাতঘড়ি ও ভ্যানিটি ব্যাগ সুমনের মাধ্যমে বাসায় পাঠিয়ে দেন। এর চার ঘণ্টা পর সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাড়ির সামনের রাস্তায় লাশ পাওয়া যায় তার। এর পাশে আরও দুটি বহুতল ভবন।

৬৪/৪ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলা মেসের বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল জানান, বুধবার রাতে তিনি বাসায় ছিলেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে বিকট শব্দ পেয়ে রাস্তার দিকে বারান্দায় ছুটে আসেন। দেখেন নিচে আরও মানুষ জড়ো হয়েছে। তার এক রুমমেট দীপ্ত সিংহ ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। এর পরই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

রুম্পার মা নাহিদা আক্তার পারুল সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়েকে আমি খুব ভালো করে চিনি। ও আত্মহত্যাকে ঘৃণা করত। রুম্পা আত্মহত্যা করতেই পারে না। আত্মহত্যা করার মতো কোনো কারণও ছিল না।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি