ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

শি জিনপিংএর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান জেলেনস্কি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:০৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন তিনি চীনা নেতা শি জিনপিংএর সঙ্গে দেখা করতে চান এবং ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের জন্য বেইজিংএর দেয়া প্রস্তাব নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করতে চান।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম বার্ষিকীতে শুক্রবার তিনি বলেন চীনের প্রস্তাব থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে তারা শান্তির প্রক্রিয়ায় জড়িত হয়েছে।

“আমি সত্যিই আশা করব চীন রাশিয়াকে কোন অস্ত্র সরবরাহ করবে না,” তিনি বলেন।

চীনা প্রস্তাবে শান্তি আলোচনার এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

তবে চীনা এই নথিতে যে ১২ দফা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তাতে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি যে রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে। এছাড়াও এতে “একতরফা নিষেধাজ্ঞা” আরোপের নিন্দা করা হয়েছে। কার্যত পশ্চিমে ইউক্রেনের মিত্রদের সমালোচনা হিসাবেই এটাকে দেখা হচ্ছে।

মি. জেলেনস্কি মি. শি-র সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের যে আহ্বান জানিয়েছেন, চীনা কর্তৃপক্ষ এখনও তাতে প্রকাশ্যভাবে কোন সাড়া দেয়নি।

ইতোমধ্যে রাশিয়া চীনের এই শান্তি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে এবং মস্কোয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে “আমরা বেইজিংএর সঙ্গে সহমত পোষণ করি।”

এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন বেইজিং রাশিয়াকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার কথা বিবেচনা করছে- যে দাবি চীন খুবই জোরের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছে।

শুক্রবার আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে আবার উল্লেখ করা হয়েছে যে চীন সরকার রাশিয়ায় ড্রোন এবং কামানের গোলাবারুদ পাঠানোর কথা ভাবছে।

আমেরিকান সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন: “আমি এই প্রস্তাবে এমন কিছুই দেখিনি যার থেকে রাশিয়া ছাড়া আর কেউ লাভবান হবে।”

চীন আপাতদৃষ্টিতে রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে, যদিও মুখরক্ষা হয় এমন একটা শান্তি চুক্তির ব্যবস্থা করে চীন প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এই সঙ্কট থেকে উদ্ধারের একটা পথ খুঁজতে চাইছে বলে মনে করছেন বিবিসির আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী বিষয়ক সম্পাদক জন সিম্পসন।

চীনের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক ওয়াং ই-র মস্কো সফরের পর চীনের দিক থেকে এই প্রস্তাব এসেছে। মি. ওয়াং বুধবার মস্কোয় প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ওই বৈঠকের পর চীনের রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া মি. ওয়াংকে উদ্ধৃত করে বলেছে চীন চায় মস্কোর সঙ্গে “আরও গভীর রাজনৈতিক আস্থার সম্পর্ক” এবং “সুদৃঢ় কৌশলগত সমন্বয়”।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা চীনের এই সর্বসাম্প্রতিক প্রস্তাবগুলোকে সেভাবে স্বাগত জানাননি।

নেটো প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন বেইজিং “খুব নির্ভরযোগ্য নয়” কারণ চীন “ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ হামলাকে নিন্দা জানায়নি”।

প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার আক্রমণ শুরু করেন ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি। যুদ্ধের প্রথম কয়েক দিনে রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে।

কিন্তু দ্রুতই ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং ব্যাপক এলাকা আবার পুনর্দখল করে নিয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে এই লড়াই দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড়ধরনের সংঘাত।

শুক্রবার কিয়েভে এক দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে মি. জেলেনস্কি বলেছেন মিত্র দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি রাখলে এই যুদ্ধে ইউক্রেন “অবশ্যই জয়ী হবে”।

পোল্যান্ড জানিয়েছে তারা ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে চারটি জার্মানিতে তৈরি লেপার্ড টু ট্যাংক পাঠিয়েছে এবং আরও পাঠাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জার্মানি বলেছে তারা আরও ১৪টি লেপার্ড ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠাবে। স্পেন এবং ক্যানাডাও ট্যাংক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ইউক্রেনকে সবেচয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দিচ্ছে আমেরিকা। তারা ৩১টি এম-১ অ্যাব্রামস ট্যাংক পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে এবং ব্রিটেন বলেছে তারা ১৪টি চ্যালেঞ্জার-টু ট্যাংক পাঠাবে।

মি. জেলেনস্কি বলেছেন আফ্রিকা এবং লাটিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে যথেষ্ট যোগাযোগ তারা করেননি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার আক্রমণকে নিন্দা জানিয়ে আনা প্রস্তাবের পক্ষে এই দুই মহাদেশের বহু দেশই ভোট দেয়নি।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি