ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

শিশু শ্রম দিয়ে কল্যাণকামী রাষ্ট্র হতে পারে না: ব্যারিস্টার নওফেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৫২, ১২ জুন ২০২১

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রোপিত কল্যাণকামী রাষ্ট্রে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি যেখানে কোন পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী থাকবে না। শিশুশ্রম জিইয়ে রেখে কোনভাবে কল্যাণকামী রাষ্ট্র হতে পারে না। এনজিও’রা তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটি পার্টিসিপেশন স্যোসাল নেটওয়ার্ক গঠনে কাজ করেছে। ফলে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে, মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, বাল্যবিবাহ কমেছে। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুশ্রম বাড়ছে, এটি অনেকটা ক্রীতদাস প্রথার মতো, এ অবস্থা দূর করতে হবে। দরিদ্রতার সুযোগে শ্রম ও শিক্ষার বিনিময়ে শিশুদের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকালে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম আয়োজিত অনলাইন ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী একথা বলেন। ঘাসফুল চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্য থাকবে না, মানবাধিকার নিশ্চিত হবে। বঙ্গবন্ধু প্রথম শিশু আইন ১৯৭৪ প্রণয়ন করেন। কল্যাণকামী রাষ্ট্র তৈরির ব্যাপারে সবাইকে নজর দিতে হবে। তিনি সমৃদ্ধি কর্মসূচি’র মাধ্যমে ২০২ টি ইউনিয়নে কিভাবে শিশুশ্রম থেকে শিশুদের বের করে আনা হয়, তার বর্ণনা দেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী মো. মজিবুল হক এমপি বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে শিশুশ্রম নিরসন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এরোমা দত্ত এমপি বলেন, একেকটি শিশু আমাদের ইকোনোমিক্যাল ইউনিট। প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযান’র নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ব্যবসাবান্ধব বাজেট নয়, শিক্ষাবান্ধব বাজেট দিতে হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কেএম আবদুস সালাম প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে সরকারের সবরকম অর্জনে বাধা এসেছে, এজন্য সরকার অনেক সেফটিনেট প্রোগ্রাম নিয়েছে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই, তবে বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ আছে। শ্রম মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত ৮ টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করেছে।

প্রাক্তন মুখ্য সচিব ও ঘাসফুল সাধারণ পরিষদের সদস্য আবদুল করিম বলেন, সরকার শিশুদের কল্যাণে যুগপোযোগী আইন প্রণয়ন করেছে। কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিশেষ করে ওসি, ইউএনও, ডিসিরা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে।

পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির সচিব এবং সিইও সুলতানা আফরোজ বলেন, শুধুমাত্র ব্রিজ-কালভার্ট বা রাস্তাঘাট উন্নয়ন নয়, সামাজিক উন্নয়নেও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি’র কাজ করার সুযোগ রয়েছে। প্রাক্তন সচিব মাফরুহা সুলতানা বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগগুলোকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে নিতে হবে এবং এজন্য জনমত গঠন করতে হবে।
একশন এইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ দরকার, স্কিল ডেভেলপমেন্টে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ছেলে শিশুরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, এবিষয়েও নজরদারি বাড়াতে হবে।

ইউসেপ বাংলাদেশ-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক দিদারুল আনাম চৌধুরী বলেন, ইউসেপ শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের শিক্ষা ও তাদের স্কিল ডেভেলপমেন্টে কাজ করছে।

ইউসেপ চেয়ারম্যান ও ঘাসফুল এর নির্বাহী সদস্য পারভীন মাহমুদ এফসিএ বলেন, শিশুশ্রমের উপসর্গ নয়, মূল কারণগুলো উদঘাটন করে সেখানে কাজ করতে হবে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের বীজ বপন করে যাওয়ার জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম এর আহ্বায়ক ও ঘাসফুল-এর সিইও আফতাবুর রহমান জাফরী। বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের প্রতিপাদ্যে ‘এখনই সময় এগিয়ে আসুন, মুজিব বর্ষের আহ্বান শিশুশ্রমের অবসান’ এর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের নিয়ে কাজ করতে সমন্বিত ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রয়োজন।

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম-এর সদস্য সচিব নার্গিস সুলতানা শিশুশ্রম নিরসনে ১২টি সুপারিশমালা পাঠ করে শোনান। অনুষ্ঠানে শিশু প্রতিনিধি মেঘলা সুত্রধর এবং টেম্পু হিউম্যান হলার পরিবহণ সমিতির সভাপতি দিলীপ সরকারও বক্তব্য রাখেন।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি