‘সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাই ছিল বিডিআর হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য’
প্রকাশিত : ১৫:১১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সারাদেশে বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিয়ে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিশাল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যেই বিডিআর হত্যাকান্ড ঘটনা ঘটেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তারা বলেন, শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এই সংকট থেকে জাতি রক্ষা পেয়েছিল।
আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তারা এমন মন্তব্য করেন তারা। দুঃখের বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র ঘটনার সাথে নিজেদের স্ম্পৃক্ততা আড়াল করতে এবং হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে ঘটনার শুরু থেকে ক্রমাগত মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে।
পিলখানা হত্যকাণ্ড এদেশের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। কিন্তু সেটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে নোংরা রাজনীতি আর ব্যক্তি স্বার্থ প্রতীয়মান। আবার সেটির যথাযথ তথ্য উপাত্ত তুলে ধরাও রাষ্ট্রসহ সুশীল সমাজ এড়াতে পারে না। সেই দায়বদ্ধতা থেকে `পিলখানা হাত্যাকাণ্ডের প্রচার- অপপ্রচার` শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম ( বোয়াফ)।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রচার- অপপ্রচার শীর্ষক আলোচনা সভাটিতে সভাপতিত্ব করেন, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়।সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সদস্য তুলি হোসেন। লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের মাত্র ২২ দিনের মাথায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। হত্যা করা হয় সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের ৫৭ জন চৌকস অফিসার সহ মোট ৭৪ জন নিরীহ মানুষকে।
সভায় বক্তারা বলেন, সত্য জানার অধিকার মানুষের আছে। সত্যের অনুপুস্থিতে মিথ্যা বা অপপ্রচার সমাজ রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিস্তার করে একটি জাতিকে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করে। তাই পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার রোধ করা সমাজ রাষ্ট্রের পাশাপাশি আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল ( অব.) একে মোহাম্মদ আলী শিকদার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল ( অব.) আবদুর রশিদ, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ মুহম্মদ শফিকুর রহমান, লে. জেনারেল মইনুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব নাছির উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সাইফুল আলম, ভ্যাটারান হকি বাংলাদেশ`র সাধারন সম্পাদক মো. ফয়সাল আহসানউল্লাহ প্রমুখ।
বিডিআর হত্যাকান্ডের সাথে বিএনপি জামাতের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তুলে ধরে বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গঠণ করেছিল আওয়ামীলীগ। অপরাধীরা বুঝতে পারে সরকারের পতন ছাড়া বিচার এড়ানো সম্ভব নয়।
বক্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে যাদের হত্যা করা হয়েছিল তারা সকলেই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের পরিবারের। জেএমবি নেতা বাংলাভাইয়ের গ্রেফতার সহ জঙ্গিবিরোধী অভিযানে তারা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। তদন্ত রিপোর্টের সূত্র ধরে বক্তারা বলেন, বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টু খুনিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। ঘটনার দিন ভোরবেলা খালেদা জিয়া কালো গ্লাসে ঢাকা গাড়ীতে করে আত্মগোপনে চলে যান। তাছাড়া খুনীদের পক্ষে আইনী লড়াই করেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ, রফিকুল ইসলাম মিয়া ও মাহবুব গং। এ থেকে স্পষ্ট হয় বিডিআর হত্যাকান্ডের নেপথ্যে কারা ছিল এবং তাদের কী উদ্দেশ্য ছিল।
পিলখানা হত্যাকান্ডের প্রচার অপপ্রচার শীর্ষক আলোচনা সভাটিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ করা হয় ও ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয়।
আ আ//
আরও পড়ুন