ঢাকা, রবিবার   ১৮ মে ২০২৫

হিংসার আগুনে পুড়েই কি স্থলবন্দরে মোদির নিষেধাজ্ঞা?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪৯, ১৮ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভারত হঠাৎ করে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এটি কি কূটনৈতিক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ? তবে গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) মনে করছে, ভারত এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কৌশলগত প্রতিক্রিয়া হিসেবে।

গতকাল শনিবার (১৭ মে) ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি স্থল শুল্ক পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু পণ্য, বিশেষ করে ফল, জুস, কার্বনেটেড পানীয়, প্রসেসড ফুড, প্লাস্টিক ও কাঠের পণ্য আমদানি করা যাবে না। এসব পণ্য এখন থেকে কেবলমাত্র কলকাতা ও মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে ঢুকতে পারবে।

জিটিআরআই-এর মতে, ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের পণ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বাধা আরোপ এবং চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির জবাবে। সংস্থাটি বলছে, "এই নিষেধাজ্ঞাগুলো একটি ধারাবাহিক প্রতিক্রিয়ার অংশ, যা মূলত বাংলাদেশের নীতিগত অবস্থান বদলের প্রতিফলন।"

জিটিআরআই-এর ব্যাখ্যায় আরও উঠে এসেছে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক চীন সফর এবং সেখানে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য— যেখানে তিনি অঞ্চলগুলোকে "সমুদ্রবিচ্ছিন্ন স্থলবেষ্টিত" বলে উল্লেখ করেন। ভারত ধারণা করছে, এ মন্তব্য এবং চীনের সঙ্গে ২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি নতুন কূটনৈতিক ভারসাম্য তৈরির ইঙ্গিত দেয়।

জিটিআরআই বলছে, ভারতীয় নিষেধাজ্ঞায় প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশি রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে— যা দুই দেশের বাণিজ্যের ৪২ শতাংশ। বিশেষভাবে পোশাক শিল্প বড় ধরনের ধাক্কা খাবে, কারণ এখন ভারতীয় ক্রেতাদের শুধুই সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে হবে।

বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও, জিটিআরআই-এর মতে, এটি একটি গুরুতর সংকেত— যা কেবল বাণিজ্য নয়, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়তে পারে। 

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের শেষদিক থেকে বাংলাদেশ একের পর এক ভারতীয় পণ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বলে দাবি ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই-এর। এতে সুতা, চাল, কাগজ, তামাক, গুঁড়ো দুধের পাশাপাশি ভারতীয় পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট ফি আরোপের বিষয়টিও রয়েছে।

এ বিষয়ে এএনআই-কে এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সুবিধা একতরফাভাবে নিতে পারে না। আমরা আলোচনায় প্রস্তুত, তবে সেটি হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে।

সূত্র: জিটিআরআই, এএনআই, দ্য ইকোনোমিক টাইমস

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি