১৫ সেনার স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির প্রস্তাব করা হবে: এবি তাজুল
প্রকাশিত : ১৮:২৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নিয়ে বেনিনে শহিদ হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তার স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির প্রস্তাব করা হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব)এবি তাজুল ইসলাম।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অবদান’ শীর্ষক এক আলোচনায় সভায় তিনি এ আশ্বাস দেন।
বেনিনে শহীদ সব বীর সেনা কর্মকর্তার ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ও বিশ্ব শান্তি সেনাদিবস উপলক্ষ্যে ডেফলগ’র সহযোগিতায় হৃদম কালচারাল সোসাইটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম ওয়াহিদুর রহমান ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএনপিএফ সাধারণ সম্পাদক ও হৃদম কালচারাল সোসাইটি’র সভাপতি মেজর আমীন আহমেদ আফসারী(অব)।
এবি তাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে অন্য দেশগুলোতে দেখা যায় সামান্য বিষয়েও দেশের জন্য মানুষে বা সেনাবাহিনীর অবদান খুব শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। কিন্তু আমার দেশে ১৪ ব্ছর আগে বেনিনে শহীদ হলো ১৫ জন বীর সেনা। তাদের কোন স্মৃতিস্তম্ভ হলো না। এটা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য খুব খারাপ বার্তা। তারা দেশের ইতিহাস ভুলে যাবে। ত্যাগীদের স্মরণ করবে না।
সংরক্ষণের অভাবে এভাবে আমাদের অনেক স্মৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু লোক এখনও আছে, যারা এগুলো নিরবে স্মরণ করে। সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু এগুলো ব্যক্তি উদ্যোগে সংরক্ষণ করলে ভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
২৫ ডিসেম্বর বিশ্বশান্তি সেনাদিবস ঘোষণা ও বেনিনে শহীদ ১৫ সেনার স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির বিষয়ে পূর্ববর্তী বক্তাদের দাবির জবাবে তিনি বলেন, একার পক্ষে কোন কিছু সম্ভব নয়। আমি এগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবো, প্রস্তাব রাখবো। দেখি কতটুকু করতে পারি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এম ওয়াহিদুর রহমান বলেন, আমাদের দেশের সেনাবাহিনী অদম্য কষ্টের মাধ্যমে শান্তিরক্ষী মিশনে দেশের সুনাম তৈরি করেছে। অথচ আমরা আজও তেমন তাদের জন্য কিছু করতে পারিনি। এটা আসলে আমাদের ব্যর্থতা। বেনিনে শহীদ ১৫জন সহ শান্তি মিশনের সব শহীদের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ করা দরকার।
ইউএনডিপি বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, আমরা নিজ উদ্যোগে এসব শহীদদের স্মরণ করার চেষ্টা করি। রাষ্ট্রের উচিত হবে এদের স্মরণীয় করে রাখতে কিছু করা। আর তা হতে পারে স্মৃতিস্তম্ভসহ আরও কিছু।
সভায় উপস্থিত বিভিন্ন শহীদ সেনা পরিবারের স্বজনরা স্মৃতিচারণ করেন। অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে বক্তব্য দেন। তাদের বক্তব্যে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির জোর দাবি জানানো হয়। শহীদ ক্যাপ্টেন আরিফ এ খান এর মা ফরিদা আক্তার বলেন, এখানে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি দাবি উঠেছে। শুনে খুবই খুশি হয়েছি। আমার সন্তানসহ আরও ১৩ জন গত ১৪ বছর আগে শহীদ হয়েছে। অথচ আজও তাদের স্মরণ করার মতো কোন স্তম্ভ তৈরি হয়নি। এটা ভভিষ্য প্রজন্ম ভুলে যাবে।
আরকে/এএ
আরও পড়ুন