ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সেমিনারে বক্তারা

২০২০ সালের পর ভবন নির্মাণে আর পোড়া ইট নয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১২:৫৭, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পোড়া ইটে পরিবেশ ও ফসলি জমির ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে ভবন নির্মাণে এটির ব্যবহার বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। 

আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে `পোড়া ইটের বিকল্প কংক্রিট ব্লক` শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এই দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি চীন, থ্যাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশেই প্রচলিত ইটের বদলে ভবন নির্মাণে বালি, সিমেন্ট, নুড়িপাথার দিয়ে বানানো ব্লক ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে যেমন কমছে কার্বন নির্গমন অন্যদিকে রক্ষা পাচ্ছে ফসলি জমি। তাই ২০২০ সালের পর ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহরে ভবণ নির্মাণে পোড়া ইটের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং রিচার্স ইন্সিটিটিউটের এক তথ্য উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, দেশে এখন বছরে কম করে হলেও ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন পিস ইট তৈরি হচ্ছে। প্রতি মিলিয়ন ইট তৈরিতে পোড়াতে হয় ২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা। কয়লার পাশাপাশি গ্রামঞ্চলে বনভূমি ধ্বংস করে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও বাঁশ। ইটভাটাগুলো থেকে বছরে কম করে হলেও ৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাইঅক্সাইড নির্গত হচ্ছে বায়ু মন্ডলে, যা দেশের মোট কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের প্রায় ২৩ শতাংশ।

ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মোট আবাদি জমির পরিমান ছিল ২ কোটি ১৭ লাখ একর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে ১৯৮৪ সালে দেশে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৩৮ হাজার একক। ১৯৯৭ সালে এসে কমে তা ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪৯ হাজার একরে এবং সর্বোপরি ২০১২ সালে বাংলাদেশের আবাদি জমির পরিমান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৫৪ হাজার একর।

প্রতি বছর জনসংখ্যা বাড়তির কারণে বাড়তি আবাসন,রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ ও প্রয়োজনীয় কাঠামো নির্মাণে ভূমির ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

বক্তারা বলেন, উন্নত-উন্নয়নশীল দেশে ভবণ নির্মাণে বালি, সিমেন্ট ও নুড়িপাথর দিয়ে ব্লক ব্যবহার করছে এতে করে একদিকে যেমন কমছে কার্বন নির্গমন থেকে পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে অন্যদিক্র রক্ষা পাচ্ছে ফসলি জমি। আমাদের দেশে কংক্রিট ব্লক ব্যবহার ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

নদী থেকে ড্রেজিং করা বালির সঙ্গে সিমেন্ট এবং পাথর কুঁচি ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে এসব ব্লক। যা পোড়ানোর দরকার নেই। ইটের চেয়ে বহুগুনেই এই কংক্রিট ব্লক টেকসই, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব বলে জানান বক্তারা।

তাঁরা বলেন, দেশের সার্বিক পরিবেশ ও ফসলি জমি রাক্ষাকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা আশা করি বর্তমান জনবান্ধব সরকার একটি সময়োপযোগী নীতিমালা গ্রহণ করে ইটের পরিবর্তে কংক্রিট ব্লক ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেছেন, টেকসই উন্নয়নে পোড়া ইটের বিকল্প কংক্রিট ব্লক। কোনো ব্রিকস খোয়া দিয়ে রাস্তা তৈরি করবেন না। কারণ এটা দীর্ঘস্থায়ী নয়। এসবের জন্য আগে ইটের ভাটা বন্ধ করা জরুরি।

এসময় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: অবিলম্বে সব সরকারি ও আধাসরকারি ভবণে ইট ব্যবহার বন্ধ করা। ২০২০ সালের পর ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহরে ভবণ নির্মাণে ইট ব্যবহার বন্ধ করা।২০২২ সালের পর সব জেলা শহরে ভবণ নির্মাণে ইট ব্যবহার বন্ধ করা পাশাপাশি ইটের বিকল্প যেকোনো প্রকার ব্লক তৈরির ফ্যাক্টিরীকে নূন্যতম ১০ বছরের জন্য সব ধরণের ট্যাক্স ও ভ্যাট এর আওতামূক্ত রাখা।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল, সাধারন সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ রেডিনিক্স কংক্রিট এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল,নগর পরিকল্পনাবিদ নিয়াজ রহমান, আদিলুর রহমান প্রমুখ।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি