৫ আগস্ট ২০২৪ : ঢাকা থেকে দিল্লিতে যায় পরপর দুটো ফোন
প্রকাশিত : ১৬:৫৭, ৫ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৭:১০, ৫ আগস্ট ২০২৫

৫ আগস্ট বেলা বারোটার দিকে ঢাকায় যখন নতুন রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঘনিয়ে আসছে, তখন দিল্লিতে প্রায় একই সময়ে বেজে ওঠে দুটো ফোন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মোড়ের সূচক হয়ে ওঠে।
প্রথম ফোনটি আসে সরাসরি ততৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর পরে দেশটির সংসদে দাঁড়িয়ে ফোনকলের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, ফোনটি কাকে করা হয়েছিল—তা প্রকাশ করেননি।
কিন্তু কূটনৈতিক রীতি অনুযায়ী বোঝা যায়, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যেই সেই গুরুত্বপূর্ণ কথা হয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বৈঠকের পর হাসিনা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে তখন ভারতের কাছে একটি অনুরোধ জানান, যেন তাকে ‘তখনকার মতো’ ভারতে আশ্রয় দেওয়া হয়।
এই অনুরোধে তৎক্ষণাৎ সাড়া দেয় দিল্লি। ঠিক তার কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় ফোনটি আসে বাংলাদেশের বিমানবাহিনী থেকে। উদ্দেশ্য-শেখ হাসিনাকে বহনকারী সামরিক বিমানের ভারতের মাটিতে অবতরণের অনুমতি চাওয়া। হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে নামার ক্লিয়ারেন্সও দ্রুত দেওয়া হয়।
এই দ্বিতীয় ফোনের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পটভূমি। বিবিসি বাংলার খবরে উঠে এসেছে, শেখ হাসিনার জীবন রক্ষায় তড়িঘড়ি তাঁকে দেশ ছাড়তে বলেছিল সেনাবাহিনী, এবং ভারতের কাছে বিশেষ বিমান পাঠানোর অনুরোধও জানানো হয়। কিন্তু দিল্লি জানিয়ে দেয়, ভারত তাকে উদ্ধার করবে না, তিনি নিজ দেশের বিমানে আসলেই কেবল আশ্রয় পাবেন।
শেখ হাসিনা অবশেষে বাংলাদেশের সিজে-১৩০ সামরিক বিমানে গাজিয়াবাদের হিন্ডন ঘাঁটিতে পৌঁছান। সেই সঙ্গে দিল্লি একটি বার্তাও দেয়, আমরা তাঁকে আনিনি, বাংলাদেশই তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে।
একই দিনে ভারতীয় পার্লামেন্টে বিরোধীরা বিষয়টি তুলতে চাইলেও সরকার সংসদে তখন নিশ্চুপ। পরে সর্বদলীয় বৈঠকে বিস্তারিত জানানো হয়। বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘সুয়ো মোটো’ বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন।
দুপুরে ঢাকার ফোন আর সন্ধ্যায় দিল্লির আলোচনায় ঘনীভূত হয় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
প্রায় এক বছর গড়িয়ে গেলেও শেখ হাসিনার ‘সাময়িক আশ্রয়’ এখন পর্যন্ত বহাল রেখেছে দিল্লী। প্রায় এক বছর পরও সেই একই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে উপমহাদেশের রাজনৈতিক আকাশে চক্তর দিচ্ছে, ভারত আর কতদিন শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিবেন?
সূত্র: বিবিসি
এসএস//
আরও পড়ুন