ঢাকা, সোমবার   ২৮ জুলাই ২০২৫

৯১-র পর থেকে বাংলা ভাষা গুরুত্ব হারাচ্ছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:০২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

৯১-র পর থেকে বাংলা ভাষা ধীরে ধীরে রাষ্ট্রের কাছে গুরুত্ব হারাচ্ছে। এর পরবর্তী সরকারগুলো ভাষার মূল্যায়নে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও এরশাদ সাহেবের অনেক দোষ ছিল। তবুও তিনি আদালতের রায়কে বাংলা করার আদেশ জারি করেছিলেন।

আজ শুক্রবার বিকালে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ’-শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক এসব কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে ‘সোনার বাংলা পার্টির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি শেখ আব্দুন নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশীদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান ও নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশিষ্ট আইনজীবী কাজী মো. মাজিদুল আলম।

আবুল কাশেম ফজলুল হক এ সময় আরও বলেন, বিলীয়মান মাতৃভাষা রক্ষার নামে শুধু শুধু সময় ও অর্থ অপচয় করা হচ্ছে। এ অর্থ ও সময় বাংলা ভাষার পিছনে ব্যয় করলে আরো ভালো ফল পাওয়া যেত। ষাট-সত্তর-আশির দশকে বাংলা একাডেমির যে গতি ছিল এখন তা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আদালতের রায় কেন বাংলায় না দিয়ে ইংরেজিতে দেওয়া হয় এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগে যারা আছেন তারা খুব মেধাবী। তারা ইচ্ছে করলে আদালতের রায় বাংলায় দেওয়া সম্ভব। আমরা যদি দাবি করি, আমাদের রাষ্ট্রভাষা বাংলা, তাহলে আদালতের রায় বাংলায় হওয়া আবশ্যক।

রাজনীতিবিদদের বিদেশী নাগরিকত্ব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে রাজনীতিবিদদের সন্তান বা পরিবারের অন্য সদস্যের বিদেশী নাগরিকত্ব থাকলে তিনি এমপি-মন্ত্রী বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকতে পারেন না। এসময় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, অং সান সুচির স্বামী বিদেশী নাগরিক হওয়ায় তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। আমাদের দেশেও সেই আইন চালু হওয়া উচিত।

সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁশের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমনিতে ভালো মানুষ। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তাকে এ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় বা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দেওয়া যেতে পারে। না

কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, দেশে ৪৫ টি মাতৃভাষা আছে। সবার মাতৃভাষা সবার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদের ভাষাকে স্বীকার না করে শুধু ভাষার মাসে এ আড়ম্বর কাম্য নয়।

এডভোকেট কাজী মাজিদুল আলম বলেন, ইংলিশ ভার্সন চালু করার ফলে বাংলা ভাষা তার অর্থনৈতিক ভিত্তি হারাবে। এভাবে চলতে থাকলে বাংলা একদিন গৌরবহারা, সমৃদ্ধিহারা ও অব্যবহার্য ভাষায় পরিণত হবে। এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সময়।

উল্লেখ্য রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে বাংলাকে রক্ষা করা ও শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংলিশ ভার্সন বর্জনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সোনার বাংলা পার্টি।

এএ/টিকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি