ঢাকা, রবিবার   ১১ মে ২০২৫

‘আরসা’র তিন শীর্ষ কমান্ডারসহ গ্রেপ্তার ১০, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার 

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৭:২৪, ২০ নভেম্বর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি আরসা’র তিন বিভাগের কমান্ডারকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে তিনটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেফতারকৃত তিনজন হলো আরসার ওলামা বডির অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার মৌলভী হামিদ হোসেন প্রকাশ ডাক্তার হামিদ, অর্থ সমন্বয়ক আবু তৈয়ব প্রকাশ সোনা মিয়া প্রকাশ সোনালী এবং আরসা’র ইন্টেলিজেন্স সেলের কমান্ডার ওসমান গনি। 

সোমবার দুপুরে র‌্যাব-১৫ এর কক্সবাজারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান র‌্যাব ১৫ অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। 

এছাড়া র‌্যাব-১৫ এর টিম পৃথক অভিযান চালিয়ে বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে তিন কেজি আফিম সহ এক মাদক কারবারি এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুল থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র সহ ডাকাতদলের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্য মতে র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা জানতে পারে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার বেশ কয়েকজন কমান্ডার অবস্থান করছে। এরই সুত্র ধরে র‌্যাব ১৫ এর বেশ কয়েকটি টিম গতকাল রবিবার মধ্যরাতে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ১৭ ও ৪ নম্বর ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসার তিন বিভাগীয় কমান্ডারকে গ্রেফতার করে। তাদের আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র গুলি এবং বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত তিনজন হলো আরসার ওলামা বডির অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার মৌলভী হামিদ হোসেন প্রকাশ ডাক্তার হামিদ, অর্থ সমন্বয়ক আবু তৈয়ব প্রকাশ সোনা মিয়া প্রকাশ সোনালী এবং আরসা’র ইন্টেলিজেন্স সেলের কমান্ডার ওসমান গনি।

গ্রেফতার এই তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার বিভিন্ন কর্মকান্ড বিশেষ করে রোহিঙ্গা খুন অপহরণ নাশকতা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা থেকে অর্থ সংগ্রহ প্রতিবেশি দেশে গোয়েন্দা তথ্য পাচার সহ অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে বলে ব্রিফিংয়ে তিনি জানান। 

লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় আরসার গোয়েন্দা টিমের কমান্ডার ওসমান গনি  তথ্য-প্রযুক্তি এবং ইংরেজী ভাষায় বেশ দক্ষতা থাকায় সে আরসা’র তথ্য-প্রযুক্তির বিষয়েও দেখভাল করতো। এই সুযোগে সে ক্যাম্পে পরিচালিত এনজিও ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য আরসা’র শীর্ষ নেতাদের সরবরাহ করতো। পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতির খবরাখবর পৌছাতো। তাছাড়া বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের  মাধ্যমে ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি লক্ষ রাখতো। কোন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলে গ্রুপের সদস্যরা গ্রুপে মেসেজ দিয়ে সকলকে সতর্ক করে দিতো।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আরসা’র সন্ত্রাসীগোষ্ঠি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধিকাংশ হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মাদকসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে আরসা’র সন্ত্রাসীরা জড়িত বলে প্রতীয়মান। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব এ পর্যন্ত এই তিনজন সহ ৭৬ জন আরসার বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডার ও সাধারণ সশস্ত্র সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র গুলি ও বিস্ফোরক দ্রব্য।  

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে আরসা’র শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সামরিক কমান্ডার, গান গ্রুপ কমান্ডার, অর্থ সম্পাদক, আরসা প্রধান আতাউল্লাহ’র একান্ত সহকারী ও অর্থ সমন্বয়ক মোস্ট ওয়ান্টেড কিলার গ্রুপের প্রধান, ক্যাম্প কমান্ডার, ওলামা বডি ও টর্চার সেল এর প্রধান। 

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব অধিনায়ক জানান, র‌্যাবের আরেকটি টিম গতকাল রবিবার রাতে বান্দরবান থানচি সড়কে তিন কেজি ২ শত গ্রাম আফিম সহ অনারমা ত্রিপুরা নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করে। 

এছাড়া আজ সোমবার ভোরে কক্সবাজার সদরের কস্তুরাঘাট নতুন ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র গুলি সহ ডাকাতদলের ৬ সদস্যকে আটক করা হয়। 
কেআই//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি