ঢাকা, শুক্রবার   ০৪ জুলাই ২০২৫

কাশ্মীরে শুক্রবার গণবিক্ষোভের ডাক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৩২, ২১ আগস্ট ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

স্থানীয় জনগণকে ভারতীয় বাহিনীর জারীকৃত নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বেরিয়ে এসে গণবিক্ষোভে যোগ দেওয়ার ডাক দিয়েছেন কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতারা। আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর ওই বিক্ষোভ আহ্বান করা হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। 

গত ২০ আগস্ট রাতভর জনগণকে এ আন্দোলনে নামার ডাক দিয়ে ছাপা পোস্টার ছড়ানো হয় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান নগরী শ্রীনগরে। ভারত সরকার কর্তৃক জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার ১৭ দিনের মাথায় কাশ্মীরে এই প্রথম এমন প্রতিবাদের ডাক এলো।

ভূ-স্বর্গ খ্যাত উপত্যকাটির বিশেষ মর্যাদা বিলুপ্তির পরপরই সেখানকার প্রায় তিন শতাধিক রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের অনেকেই ভারতীয় সরকার বিরোধী এবং কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন করেছেন বলে অভিযোগ।

শ্রীনগরে ছড়ানো ওইসব পোস্টারের মধ্যে একটিতে লেখা ছিল, ‘সব মানুষ, তরুণ ও বৃদ্ধ, পুরুষ ও নারী সবার উচিত জুমার নামাজের পর মিছিলে যোগ দেয়া।’ দ্য ‘জয়েন্ট রেজিসটেন্স লিডারশিপ’-এর নামে ওই পোস্টারগুলো ছাপা হয়, যা কাশ্মীরের বৃহৎ সব বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের প্রতিনিধিত্ব করছে বলে জানানো হয়।

পোস্টারে স্থানীয় জনগণকে শ্রীনগরস্থ জাতিসংঘের মিলিটারি অবজারভার গ্রুপের কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ১৯৪৯ সালে ভারত-পাকিস্তান প্রথম যুদ্ধের পর শ্রীনগরে জাতিসংঘের এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়।

আগামী শুক্রবারের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে ক্ষুব্ধ এক কাশ্মীরি বলেন, কেন্দ্র সরকার হাজার হাজার বহিরাগতকে এখানে পাঠিয়ে কাশ্মীরের জন পরিসংখ্যানে পরিবর্তন আনার নীল নকশা গ্রহণ করেছে। স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের প্রতি জুমার নামাজের খুৎবায় এ আশঙ্কা নিয়ে কথা বলারও আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে, শ্রীনগরের যেসব এলাকায় বিক্ষোভ হচ্ছে- সেখানকার সাধারণ মানুষ শুক্রবারের বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

মধ্য-বয়সী একজনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, আমরা চেষ্টা করব, লোকজন যাওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু জানি না তারা আমাদের যেতে দেবে কিনা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করতে চাইছিল। সরকার তাদের সেই প্রচেষ্টায় সফল হলেও কাশ্মীরের বৈধ স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করে নেওয়া আদতে কারও জন্যই ভাল হবে না বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।

তাদের মতে, এটা কাশ্মীরে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আন্দোলনের পালে আরও হাওয়া বাড়াবে এবং তা ৩০ বছর ধরে জ্বলতে থাকা কাশ্মীরের বিদ্রোহের আগুনে ঘি ঢালবে।

এদিকে, বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আগের দিন থেকেই বাড়তি নিরাপত্তা জন্য কাশ্মীরজুড়ে অতিরিক্ত হাজার হাজার সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে।

এমনকি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কারফিউ জারি ছিল সেখানে। যে কারণে ল্যান্ডফোন, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে কারফিউ না থাকলেও সদ্য সাবেক হওয়া রাজধানী শ্রীনগরে চলাচলের উপর রয়েছে নানা বিধি-নিষেধ।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার এত কড়াকড়ির মধ্যেও কাশ্মীরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ থেমে নেই। বিশেষ কয়ে শ্রীনগরের নানা জায়গায় শুরু থেকেই খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভের খবর এসেছে নানা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

অন্যদিকে, উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লায় বুধবার ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বন্দুকযুদ্ধে ২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভারতীয় পুলিশের গুলিতে এক সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার পর তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়। সূত্র-দ্য গার্ডিয়ান।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি