নামিদামি চেইন শপেও ভেজাল
প্রকাশিত : ২১:৩৬, ৩ জুন ২০১৯

রাজধানীর ফুটপাথে মৌসুমি ইফতার বিক্রেতা থেকে শুরু করে নামিদামি রেস্টুরেন্টগুলোও ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের রমরমা ব্যবসা করছে। ঢাকার আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চেইন রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের কাছ থেকে গলাকাটা দাম আদায় করলেও খাদ্যের মান রক্ষার দিক দিয়ে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা করছেন।
তারা শুধু অস্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়া ও পরিবেশে খাবার তৈরি করে থেমে নেই, একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) অনুমোদনবিহীন খাবার বিক্রি, পোড়া তেল ব্যবহার, ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার ও ফ্রিজে বাসি মাংস সংরক্ষণ করে তা ক্রেতাদের খাওয়াচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রমজানে ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত অনেক প্রতিষ্ঠানকেই জরিমানা করেছে।
নোংরা পরিবেশে খাদ্য তৈরি, পচা-বাসি খাবার বিক্রি ও খাবারে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর অপরাধে রাজধানীর গুলশানে ছয়টি রেস্তোরাঁকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রোববার এ অভিযান চালানো হয়।
গত রোববার র্যাব-১ গুলশান এলাকায় ভেজালবিরোধী অভিযান চালায়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ছয়টি রেস্তোরাঁয় অভিযানে গিয়ে দেখা যায়- কোনো কোনো রেস্তোরাঁর রান্নাঘরের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে উন্মুক্ত নালা। নালায় জমে আছে নোংরা পানি ও আবর্জনা। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ফ্রিজে রাখা খাদ্যসামগ্রী পচা ও বাসি। ড্রামে কয়েক দিন আগের তেঁতুল মেশানো পানি পাওয়া গেছে। এমনকি বাসি দইবড়ায় ছত্রাক জমে আছে।
এসব অপরাধে খাজানাকে ৭ লাখ, খানা খাজানাকে ৩ লাখ, নান্দুসকে ২ লাখ, সলজ রেস্টুরেন্টকে ৪ লাখ, বিডিটিউবকে ২ লাখ এবং বিট ফায়ারকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
খাদ্যে ভেজাল সম্পর্কে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি লোভের কারণে খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছেন। ভেজাল রোধে দরকার পর্যাপ্ত মনিটরিং। বিএসটিআই, সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের এ জন্য নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অসাধুদের জরিমানাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪৩ ধারা অনুযায়ী অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন আইনে দণ্ডনীয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. খলিলুর রহমান বলেন, ঢাকার হোটেলগুলোতে খাবার রান্নায় যে পানি ব্যবহার করা হয় তাতে বহু ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সাধারণত হোটেল-রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর খোলা জায়গায় ও গরম পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ খাবার রাখার ফলে তা নষ্ট হয়ে যায়।
আরকে//
আরও পড়ুন