ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ জুলাই ২০২৫

পশ্চিমবঙ্গে ফের খুন বিজেপি নেতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:১১, ৫ অক্টোবর ২০২০

যেখানে হত্যাকাণ্ড হয় (হাতের বা’ দিকে)। মণীশ শুক্ল (ডান দিকে)- সংগৃহীত

যেখানে হত্যাকাণ্ড হয় (হাতের বা’ দিকে)। মণীশ শুক্ল (ডান দিকে)- সংগৃহীত

Ekushey Television Ltd.

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আরও এক ভারতীয় জনতা পার্টি’র (বিজেপি) নেতা খুন হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে রাজ্য জুড়ে রীতিমতো উত্তেজনা শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয় তাকে। খবর ডয়চে ভেলে ও আনন্দবাজার পত্রিকা’র। 

নিহতের নাম মনীশ শুক্লা। নিহতের সময় তার সহকারী গোবিন্দও আহত হন। মনীশা ব্যারাকপুর-টিটাগড় এলাকায় বাহুবলী বলে পরিচিত ছিলেন মনীশ। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মনীশ হত্যার পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করছে বিজেপি। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও ঘটনার কড়া নিন্দা করে আজ সোমবার রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে রাজভবনে তলব করেছেন।

গত কয়েক মাস ধরেই একের পর এক রাজনৈতিক খুন হয়ে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। একাধিক বিজেপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছেন তৃণমূলের নেতাও। তবে রোববারে যা ঘটেছে, তা ভয়াবহ। বিজেপির মাঝারি মাপের নেতা মনীশ শুক্লা দাঁড়িয়ে ছিলেন টিটাগড় থানা এবং পুরসভার মধ্যবর্তী একটি বাজার এলাকায়। ভর সন্ধ্যায় বাজার রীতিমতো জমজমাট ছিল। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সে সময় তৃণমূলের একটি মিছিল সেখান দিয়ে যায়। মিছিল শেষ হতেই কয়েকটি বাইক মনীশের খুব কাছে চলে আসে। হেলমেটধারী দুষ্কৃতীরা গুলিবর্ষণ করতে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন মনীশ। তাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তার সহকারী গোবিন্দ। আহত অবস্থায় দুইজনকেই বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মনীশকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গোবিন্দের চিকিৎসা চলছে।

ঘটনার পর শাসক দলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের গুন্ডারাই মনীশক হত্যা করেছে। ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করা হয়েছে। অন্য দিকে তৃণমূলের দাবি, এর পিছনে বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্বই দায়ী। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘একের পর এক বিজেপি নেতাকে খুন করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে গণতন্ত্র বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই।’

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করেছেন রাজভবনে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাজ্যপালের এই তলব রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব চলছে। এর আগেও রাজ্যপালের বৈঠকে যোগ দেননি রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা। 

দীর্ঘদিন ধরেই ব্যারাকপুর-টিটাগড় এলাকায় বাহুবলী বলে পরিচিত ছিলেন মনীশ। বাম আমলে তড়িৎ তোপদারের শক্ত ঘাঁটি ছিল ব্যারাকপুর। মনীশের উত্থানও সে সময়ে। পরবর্তীকালে তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অর্জুন সিয়ের ঘনিষ্ঠ হন তিনি। অর্জুন নিজেও বাহুবলী নেতা। অর্জুনের হাত ধরেই মনীশ যুব তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠেন। 

স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, টিটাগড় এলাকায় ভোটের সময় ‘ত্রাস’ ছিলেন মনীশ। কাউন্সিলরও হয়েছেন। অর্জুন বিজেপিতে যোগ দিলে মনীশও বিজেপিতে চলে আসেন। তার খুন ঘিরে রীতিমতো উত্তেজনা শুরু হয়েছে টিটাগড় অঞ্চলে। বিজেপি এবং তৃণমূলের বাহুবলী গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই হয়েছে বলেও জানা যায়। 

এমএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি