ভালোবাসা জিতল হারল কাঁটাতার, ভালোবাসার টানে খুলনায় চীনা যুবক
প্রকাশিত : ২০:৪৭, ৬ জুলাই ২০২৫

ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম কিংবা দূরত্ব—কোনো কিছুই থামাতে পারেনি হৃদয়ের টান। ভালোবাসাই যেন চূড়ান্ত শক্তি, যা জয় করে নিয়েছে হাজার মাইল দূরের পথও। খুলনার দাকোপ উপজেলার নির্জন পল্লীতে এমনই এক চিরন্তন প্রেমের গল্প রচনা করলেন চীনা যুবক ঝাং বুথাও ও বাংলাদেশের পিংকি সরদার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মাত্র দুই মাস আগে তাদের পরিচয়। সেখান থেকে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব খুব দ্রুতই রূপ নেয় গভীর ভালোবাসায়। দূরত্বকে তুচ্ছ করে প্রেমের পরিণতি দিতে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন ঝাং বুথাও। ভালোবাসার হাতছানিতে তিনি পাড়ি জমান চীন থেকে বাংলাদেশে।
সম্প্রতি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এই দম্পতি। এখন তারা পিংকির বাবার বাড়ি দাকোপের খ্রিষ্টানপল্লিতেই অবস্থান করছেন। নতুন সংসারে এবং ভিন্ন সংস্কৃতির পরিবেশে দু’জনেই বেশ খুশি।
পিংকি সরদার বলেন,‘আমরা একে অপরকে খুব ভালো বুঝি। ঝাং বুথাও খুব সৎ, যত্নশীল ও ভালো মানুষ। ওর সঙ্গে জীবন অনেক আনন্দে কাটছে।’
ঝাং বুথাও ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছেন নতুন পরিবেশের সঙ্গে। ভাষাগত কিছু সমস্যায় পড়লেও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কথা বলছেন পিংকির পরিবারের সঙ্গে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরাও নতুন এই অতিথিকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। প্রতিবেশীরা বলছেন, প্রতারণায় ভরা এই সময়ে এমন আন্তরিক প্রেম বিরল।
ঝাং বুথাও বলেন,‘ফেসবুকে পিংকির সঙ্গে আমার পরিচয়। প্রথম দেখাতেই বুঝি, সে খুব ভালো মানুষ। কিছুদিন প্রেম করার পর আমরা বিয়ে করি। এখন আমি ওর বাড়িতে থাকছি। এখানকার পরিবেশ ও মানুষ খুব ভালো।’
বাংলাদেশি খাবারের স্বাদেও অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন ঝাং। প্রথমদিকে মসলার ঝাঁজে চমকে উঠলেও এখন সেটিই উপভোগ করছেন। ভবিষ্যতে পিংকিকে চীন নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাও রয়েছে তার। পাশাপাশি বাংলাদেশে থেকেই ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
এই অনন্য প্রেমগাঁথা প্রমাণ করে দিয়েছে—ভালোবাসা যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি কোনো সীমান্তে থেমে থাকে না। ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি কিংবা দূরত্ব, কিছুই পারে না সেই টানকে আটকে রাখতে। ঝাং-পিংকির গল্প যেন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ভালোবাসা এখনো অলৌকিক শক্তির মতোই হৃদয়ে বিরাজমান।
এসএস//
আরও পড়ুন