ঢাকা, রবিবার   ১৩ জুলাই ২০২৫

লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজ ডুবিয়ে দিল হুথিরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৩, ১০ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৫, ১০ জুলাই ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইয়েমেনের হুথিদের আক্রমণে লোহিত সাগরে একটি পণ্যবাহী জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর ছয়জন ক্রুকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী নিশ্চিত করেছে, সোমবারের (৭ জুলাই) হামলার পর ছয়জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অন্তত চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন এবং এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১৫ জন। খবর আল-জাজিরার। 

লাইবেরিয়ান পতাকা-ধারী জাহাজটি সুয়েজ খালের দিকে যাওয়ার সময় একযোগে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে পড়ে। দুই দিন পর, বুধবার জাহাজটি সম্পূর্ণভাবে ডুবে যায়। হামলার দৃশ্যসহ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হুথি গোষ্ঠী, যেখানে দেখা যায় বিস্ফোরণের পর জাহাজটিতে আগুন ধরে গেছে।

হুথি সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি দাবি করেছেন, ওই জাহাজটি ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এবং গাজায় চলমান সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে এই হামলা চালানো হয়েছে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, হামলার পর জাহাজের ক্রুদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন মিশনের দাবি, হুথিরা আহত নাবিকদের অপহরণ করেছে। তারা এসব জীবিত সদস্যদের অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।

ইউরোপীয় বাহিনীর ‘অপারেশন অ্যাস্পিডিস’ জানিয়েছে, জাহাজটির ২৫ জনের মধ্যে ৬ জন—যাদের মধ্যে পাঁচজন ফিলিপাইন এবং একজন ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে।

হুথিদের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শিপিং সংস্থাগুলোর জোট, যার মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং এবং বিআইএমসিও। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে, 'এই হামলাগুলো নিরপরাধ নাবিকদের প্রতি চরম অবজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল সুরক্ষায় এখনই কার্যকর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।'

এই হামলার একদিন আগেই হুথিরা ‘ম্যাজিক সিজ’ নামের আরেকটি কার্গো জাহাজে আঘাত হানে এবং সেটিও ডুবে যায়। তবে সে ঘটনায় সব নাবিককে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে হুথিরা ১০০টির বেশি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে দুটি জাহাজ ডুবে গেছে, একটি তারা এখনো দখলে রেখেছে এবং এই সময়কালে অন্তত চারজন নাবিক প্রাণ হারিয়েছেন।

মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও হুথিদের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়, যেখানে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে হুথিরা জানিয়ে দিয়েছে—ইসরায়েল-সম্পর্কিত জাহাজের ওপর হামলা চালানো অব্যাহত থাকবে।

এছাড়া, হামলার দিনই ইসরায়েল পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত তিনটি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। জবাবে হুথিরাও ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি