সেনা সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল, বাসভূমিতে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
প্রকাশিত : ১০:১২, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১০:১৮, ১২ অক্টোবর ২০২৫

অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। গাজার কিছু এলাকা থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল।
শনিবার পর্যন্ত গাজার মধ্যাঞ্চলীয় শহর গাজার সিটির শেজাইয়া, আল তুফাহ এবং জেইতুন এলাকা, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের পূর্বাংশ এবং দক্ষিণাংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার থেকে ইসরায়েল-গাজা সীমান্তের ‘ইয়েলো লাইন’ ক্রসিং দিয়ে সেনাদের ফিরিয়ে আনা শুরু হয়।
ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, তারা পিছিয়ে এসে সেখানে এমন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে, যা নিয়ে উভয়পক্ষ সম্মত। যদিও ওই উপত্যকার অর্ধেকই তাদের দখলে।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার দিকে যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে সেখানে ইসরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি ফেরানোর পরিকল্পনার প্রথম ধাপ ইসরায়েল সরকারের অনুমোদনের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী ধাপগুলো নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
সমঝোতা অনুযায়ী, হামাসকে সোমবার স্থানীয় সময় ১২টার মধ্যে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। এর মধ্যে ২০ জন জীবিত আছে বলে মনে করা হয়। আর ২৮ জনের দেহাবশেষ রয়েছে হামাসের কাছে।
ইসরায়েলকেও সেখানকার কারাগারগুলোতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন এমন আড়াইশ’ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া গাজা থেকে আটক করা ১৭০০ ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দিতে হবে।
ইসরায়েল আর্মির রেডিও জানিয়েছে, এর মধ্যে ১০০ জনকে পশ্চিম তীর ও পাঁচ জনকে পূর্ব জেরুজালেমে মুক্তি দেয়া হবে।
সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী, ত্রাণবাহী লরিগুলোকে গাজায় বাধাহীন প্রবেশ করতে দিতে হবে।
ওদিকে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা দুশোর বেশি মার্কিন সেনাকে ইসরায়েলে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তারা গাজা যুদ্ধবিরতি মনিটর করবেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাজা শহরের উত্তর পশ্চিম শহরতলী থেকে সৈন্যরা পূর্ব দিকে পিছিয়েছে। এছাড়া দক্ষিণে খান ইউনিস থেকেও কিছু সেনার সরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সেনা প্রত্যাহারের পরপরই অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। কেউ কেউ ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন দুর্বল ও অপুষ্টিতে ভোগা। এদের অনেকেই ফিরছেন গাজা শহরে যার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে নিহতদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হচ্ছে।
হামাস পরিচালিত গাজা সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলেছে, শুক্রবার প্রায় দুই লাখ মানুষ গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরেছে।
এদিকে ইসরায়েলে জিম্মিদের পরিবারও যুদ্ধবিরতির খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে। নিহত জিম্মি তাল হাইমির আত্মীয় উরি গোরেন বলেছেন যুদ্ধবিরতি সমঝোতা একটি 'বড় স্বস্তি'। যদিও হামাস বলেছে নিহত সব জিম্মিদের দেহাবশেষর অবস্থান সম্পর্কে তাদের জানা নেই।
ইসরায়েলে ২০২৩ সালের সাতই অক্টোবর হামাস হামলা চালালে ১২শ’ মানুষ নিহত হয় এবং তখন তারা ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল।
এরপর ইসরায়েলের অভিযানে ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজারই শিশু বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
জাতিসংঘ কমিশন ও বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলকে যুদ্ধের সময় গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছে। যদিও ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
এএইচ
আরও পড়ুন