সেই অসহায় বাবার ঘরে খুশির বন্যা
প্রকাশিত : ২২:১০, ১৯ জুলাই ২০২১

টাকার অভাবে ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনিয়া খাতুনের মাতৃত্বকালীন সমস্যা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিল না পিতা ফজলুর রহমানের। যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের সংসার সব সময় চলে টান পোড়েনের মধ্য দিয়ে। তার মধ্যে মেজো মেয়ে সোনিয়া ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এক ডাক্তার বলেছেন নরমাল ডেলিভারি হবে না। সিজার করতে হবে। ১২ হাজার টাকা লাগবে। বাড়িতে নেই এক টাকাও। তাই মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিলেন অসহায় এই পরিবারটি। চিন্তার ছাপ অসহায় বাবা ফজলুর রহমানের চোখে মুখে।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে অন্ত:সত্ত্বা সোনিয়া খাতুনের মাতৃত্বকালীন সময়ের সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে শার্শা থানা পুলিশ।
অবশেষে নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে সেই সোনিয়ার কোল জুড়ে আসে একটি পুত্র সন্তান। এই খুশিতে ফজলুর রহমানের পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা। মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ আছেন। সুখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে নানি রাবেয়া খাতুন। জীর্ণ কুটিরে আলোর ছটা। রোববার (১৮ জুলাই) পাশর্^বর্তী কলারোয়ার গয়ড়া বাজারে রমজান আলী নামের এক ডাক্তারের তত্বাবধানে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে জন্ম নেয় এই শিশু।
শিশুটি গর্ভে আসার পর থেকে সুখকর ছিলোনা সোনিয়ার জীবন। স্বামী খোঁজ নেইনি সন্তান হওয়ার আগ পর্যন্ত। তবে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পরপরই খোঁজ নেয়া শুরু করেছে তার স্বামী। বাপের বাড়ি কেটেছে কষ্টের জীবন। মেয়ের ডেলিভারি করানো নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলো ফজলুর রহমান। একটি সংবাদেই দুর হয়েছে ফজলুর দুশ্চিন্তা। সোনিয়া সুখের মুখ দেখেছে। ধনী পরিবারের মেয়েদের মতই সোনিয়ার মাতৃত্বকালীন সময় কেটে যাবে সকলের সহযোগিতায়।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা, পুলিশের নাভারন সার্কেলের এএসপি জুয়েল ইমরান, বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ফরিদ ভূইয়া, বাগআঁচড়া জোহরা মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডাঃ হাবিবুর রহমান হাবিবসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে সোনিয়ার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। তার প্রতি সার্বিক খেয়াল রেখেছেন। একটি অসহায় পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে যারা এগিয়ে এসেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেছেন সোনিয়ার বাবা ফজলুর রহমানসহ স্থানীয় প্রশাসন।
আরকে//
আরও পড়ুন