ঢাকা, রবিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মামলার জেরে আমন ধান নষ্টের অভিযোগ 

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৯:৫৭, ১৬ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ২০:১৯, ১৬ অক্টোবর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিকভাবে জমিজমা মামলার জেরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কাথাইল গোপীনাথপুর গ্রামের মাঠে প্রায় দেড় বিঘা জমিতে আধা-পাকা আমন ধানে ডামেক্লিন ওষুধ (গ্রাম ম্যাকসিন) ছিটিয়ে ফসল নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় জমির মালিক প্রতিপক্ষ ৭ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। গত  সোমবার ওই মাঠে এ ঘটনা ঘটে। 

তবে জমির মালিক বুধবার তার ফসল নষ্টের বিষয় জানতে পারে। বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন, দক্ষিণ পাকুরিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, পরিবানু, বেদেনা খাতুন এবং শিল্পি বেগম।   

জমির মালিকের অভিযোগ, জমিজমা সংক্রান্ত মামলার জেরে আসামীরা আমার আধা-পাকা আমন ধানে আগাছা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে ফসল নষ্ট করেছে।

সরেজমিনে ওই মাঠে গিয়ে জমির মালিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে এবং মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিন পাকুরিয়া গ্রামের চাষী মোশারফ হোসেন পাশর্^বর্তী কাথাইল গোপিনাথপুর গ্রামের মাঠে তার নিজস্ব দেড় বিঘা জমিতে আমন ধান লাগায়। ইতিমধ্যে ওই মাঠের আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পর তার ধান কাটা হবে। এরই মধ্যে গত সোমবার তার ক্ষেতে ডামেক্লিন ওষুধ (গ্রাম ম্যাকসিন) ছিটিয়ে দেয়। বুধবার সকালে জমির মালিক মাঠে গিয়ে দেখে তার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ধানের কাঁচা গাছ শুকিয়ে গেছে। শীষের ধান পেকে ঠোশা হয়েছে। গাছগুলো মাটিতে পড়েও যাচ্ছে। অথচ আশপাশের জমিতে ধান গাছ আধা-পাকা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার স্বাক্ষী আকতার হোসেন বলেন, আমন ধানের একটি গাছও জীবিত নেই। আগাছা নিধনের ওষুধ ছিটিয়ে পুরো দেড় বিঘা জমির ধানই নষ্ট করে ফেলেছে। কয়েকদিন পরই তার ধান কাটা হত। এ ঘটনায় যাদেরকে আসামী করে জমির মালিক মামলা করেছে তাদের সাথে ওই জমি নিয়ে অনেক আগে থেকে আরেকটা মামলাও চলমান রয়েছে। ওরাই এই কাজ করেছে। হাজার শক্রু হলেও অন্য কেউই এ ধরনের কাজ করতে পারেনা।  

জমির মালিক ও মামলার বাদী মোশারফ হোসেন বলেন, আসামীদের সাথে জমি নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু ওই জমিতে আমি দীর্ঘদিন ধরে ফসল ফলাচ্ছি। জমিও আমার দখলে রয়েছে। মামলায় হেরে গেলে অবশ্যই জমি তাদের ছেড়ে দিব। তার আগে কেন ওরা বার বার আমার ফসল নষ্ট করছে। এর আগেও একবার এই জমির ফসল নষ্ট করেছে। তাই বাধ্য হয়ে ওদের নামে মামলা করেছি। গ্রামের অন্য কেউ আমার ফসল নষ্ট করবেনা। ওরা আমার পাকা ধানে মই দিয়েছে। ওরে বিচার চাই। 

মামলার আসামী শরিফুল ইসলাম বলেন, জমাজমি নিয়ে একটি মামলা চলমান রয়েছে এটা সত্য, এছাড়া আমাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায়ও আরেকটি মামলা রয়েছে। ওই মামলাগুলোতে সে হেরে যাবে ভেবে নিজেই এ কাজ করে এখন আমাদের দোষারোপ করছেন। আমরা তার ফসলের ক্ষতি করবো কেন। এটা ওর পূর্ব পরিকল্পিত কাজ। 

আহম্মেদাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, শুনেছি ওদের ক্ষেতে ওষুধ ছিটিয়ে ফসল নষ্ট করেছে। তাই ওরা ৭ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমাজমি নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। আবার নতুন করে এই ঘটনা। 

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক বলেন, ফসল নষ্টের বিষয়ে মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  
কেআই//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি