প্রেম না প্রলোভন, চীনা যুবকের আগমনে নাসিরনগরে প্রশ্নের ঝড়
প্রকাশিত : ১১:২৫, ৪ নভেম্বর ২০২৫
				
					প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ছুটে আসেন এক যুবক। দূরদেশি প্রেমিকের আগমনে অনেকেই আপ্লুত। কিন্তু সচেতন মহল সতর্কবার্তা দিচ্ছেন—এই গল্পের আড়ালে থাকতে পারে পরিকল্পিত প্রলোভন।
বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ আছে, অনলাইন প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েদের শোষণ, পাচার ও যৌনপল্লীতে বিক্রি পর্যন্ত করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের সঙ্গে চীনের হোয়ানান প্রদেশের যুবক ওয়াং তাও-র পরিচয় ‘ওয়াল টক’ নামের মোবাইল অ্যাপে। মাত্র দেড় মাসের পরিচয়ের মধ্যেই ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে; তারপর হঠাৎই সম্পর্ক নথিভুক্ত করার দাবি নিয়ে ওয়াং তাও বাংলাদেশে চলে আসেন।
গত ৩১ অক্টোবর রাতে ঢাকায় পৌঁছে সরাসরি নাসিরনগরের সুরমার বাড়িতে যান তিনি।
এটাই যে কেবল ভালোবাসার গল্প—তা কি নিশ্চিত বলা যায়? এলাকার আনন্দিত কিছু মানুষ দেখতে পেলেও সচেতন নাগরিক সংগঠন, শিক্ষাবিদ ও আইনজীবীরা হার্ড রিয়ালিটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। অনলাইনে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোতে দেখা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি পরিচয়ের আড়ালে ভিসা, অর্থনৈতিক প্রলোভন বা অন্য উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে— পরবর্তীতে এসেছে নির্যাতন, আর্থিক শোষণ, এমনকি মানবপাচারের চক্রে জড়ানো হওয়ার অভিযোগ।
সচেতন মহল বলছে, এমন ধরনের মেয়েদের বিক্রি করে দেয়া বা যৌনকর্মে বাধ্য করার মতো ভীষণ ঘটনার তথ্যও ওঠে এসেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিল; পাসপোর্ট যাচাই করলে দেখা গেছে ওয়াং তাও চীনের নাগরিক। তবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা এখনো সম্পন্ন হয়নি; চলছে আইনি প্রক্রিয়া।
বিদেশি নাগরিক বিয়ে করতে হলে চীনের দূতাবাসের অনুমতি নিতে হবে। সে কোনো অনুমতি নিয়ে আসে নাই। এটা একটি বিশাল প্রতারণা ফাঁদ হতে পারে। এই তরুণী চীনে গিয়ে মানবপাচারের শিকার হতে পারে। চীন থেকে দিকনির্দেশনা আছে— কোনো চীনা নাগরিকের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ে এড়িয়ে চলুন, নতুবা তা প্রতারণার সুযোগ দিতে পারে।
এখন প্রশ্ন একটাই—ওয়াং তাও কি সত্যিকারের ভালোবাসার খোঁজে এসেছেন, না কি আরেকটি প্রতারণার অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে? সুশীল মহলের মতে, ভালোবাসার গল্প হোক নিরাপদ, কিন্তু আইন ও সতর্কতা যেন না থাকে অবহেলায়।
স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দ থাকা সত্ত্বেও, সচেতনরা বলছেন—যদি পরিবারের নজর, স্থানীয় সচেতন ক্যাম্পেইন ও আইনি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে তরুণীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে মোড় নিতে পারে; মানবপাচার ও যৌনশোষণের মতো ভয়ঙ্কর পরিণতি সামনে চলে আসতে পারে।
এএইচ
আরও পড়ুন
				        
				    









