বিনা নোটিশে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ, লুটপাটের অভিযোগ
প্রকাশিত : ২০:১২, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সাভারে বিনা নোটিশে থানা পুলিশের সহযোগীতায় বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি উচ্ছেদ, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। সোমবার দুপুরে পৌর এলাকার ইমান্দিপুর মহল্লার জার্মানির টেক এলাকায় এক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।এ সময় ওই এলাকার ৭টি প্লটে থাকা প্রায় ২০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম ও তার টিমের সদস্যদের ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
এসময় তার কাছে উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা এখানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য করছি।এখানে আদালত থেকে ম্যাজিস্ট্রেটসহ লোকজন এসে যার জমি তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রায় এক যুগ আগে জমি কিনে ঘরবাড়ি করে কোন মতে দুই সন্তান নিয়ে দখল হওয়া একটি প্লটে বসবাস করছিলেন বিবি ফাতেমা। সোমবার হঠাৎ একদল লোক এসে পুলিশের সহযোগীতার তারা বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় এবং তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে রাস্তায় বের করে দেয়।
এই ব্যাপারে বিবি ফাতেমা বলেন, কোন নোটিশ না দিয়ে, না জানিয়ে হঠাৎ একদল লোক এসে আমার বাড়িঘরে ভাংচুর চালায়।এ সময় তারা আমার বাড়িঘর দখল করে নিয়ে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।আমি প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে মারধরও করেছে।
বিবি ফাতেমা অভিযোগ আরও করেন, আমি শুধু বলেছি যে, অনেক কষ্ট করে এখানে জমি কিনে আমি বাড়ি করেছি। আমার খাজনা-খারিজ, বৈধ কাগজপত্র সবই আছে।এই কথা বলায় তারা আমাকে থাপ্পর মেরে রাস্তায় ফেলে দেয় এবং ঘরের তালা ভেঙ্গে কাগজপত্র ও টাকা-পয়সাসহ ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং আমাকে রাস্তায় ফেলে দেয়। আমার জমি আমাকে না জানায় কিভাবে বেদখল হলো আর দুই থাপ্পর মেরে আমারে বিদায় করে দিলো তার বিচার করার লোক নাই।আজকে আমার কাগজ দেখার মতো লোকও নাই।
দখল হওয়া বাড়িগুলোতে লাগানো সাইনবোর্ডে লেখা আছে অর্থঋণ আদালত ঢাকা হতে নিলামে ক্রয়কৃত এই সম্পত্তির মালিক মো.মশিউজ্জামান চৌধুরী। মোজা ইমান্দিপুর, প্লট নং-৩৭।
শফিকুল ইসলাম নামে অপর ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, আলম নামে এক ব্যক্তি এই জায়গা ব্যাংকে বন্ধক রেখেছিলো। কিন্তু তার জায়গা আর এই জায়গা এক নয়।এই দাগে ১৪ বিঘা জমি আছে। তাদের ৩৮ দাগের উত্তরে হলো ঈদগাহ মাঠ, কিন্তু আমার জায়গার উত্তরে কোন ঈদগাহ মাঠ নাই।তারপরও তারা পুলিশের সহযোগীতা জোর-জবরদস্তি আমার বাড়িটি দখল করে নিয়েছে।কিছু বলতে গেলে পিটিয়ে আমাদের তাড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
জানতে চাইলে দখলের নের্তৃত্বে থাকা মো.জাকির বলেন, সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু শাখায় ৩৯ শতাংশ জমি বন্ধক রাখা হয়েছিলো।সেখান থেকে নিলাম হওয়ার পর আমরা জমিটি ক্রয় করি।আজ সকালে কোর্টের প্রসেস সার্ভেয়ার লতিফুর রহমান পুলিশ নিয়ে এসে আমাদের জমিটি বুঝিয়ে দেয়। আমার প্রতিটি প্লট কাগজে উল্লেখ করা আছে। কিন্তু কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বলেন এটা কোর্টের লোক নিয়ে চলে গেছে।
দখলের বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)এএফএম সায়েদ বলেন,কোর্টের আদেশে একটি উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। কোর্টের বিরুদ্ধে কোন কথা বলার অধিকার আমার নাই। আমাদেরকে পুলিশ পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হলে আমরা পুলিশ পাঠিয়ে দেই।
কেআই/
আরও পড়ুন