ঢাকা, রবিবার   ২৯ জুন ২০২৫

জন্মদিনে প্রবাসীর ভিন্নধর্মী আয়োজন

নড়াইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৪:২৬, ১৬ মার্চ ২০২০

Ekushey Television Ltd.

প্রায় ৪০০ লোকের খাবারের আয়োজন। জোহরের নামাজের পর একে একে আসছেন সবাই। এদের মধ্যে গরিব ও এতিমদের সংখ্যাই বেশি। উপলক্ষ, জন্মদিনের দাওয়াত। তবে কারোর হাতে কোনো গিফট বা উপহার সামগ্রী নেই, নেই কোনো কেক কাটার আয়োজন। বেলুন ও মোমবাতির আলোও নেই।

জন্মদিনের এমন পরিবেশ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পিরোলী গ্রামে। ওই গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী জহিরুল ইসলাম তার মেয়ে জারা জহিরের জন্মদিন উপলক্ষে রোববার (১৫ মার্চ) দুপুরে এমন আয়োজন করেন। যদিও জহিরুল ও তার মেয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। 

প্রায় সাত বছর যাবত দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে আমেরিকায় আছেন জহিরুল। তারা আমেরিকায় থাকলেও পরিবারের অন্য সদস্যরা এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন। 

শুধু এতিম ও গরিবদের জন্য ভালো খাবারের আয়োজনই নয়, তাদের মাঝে নতুন পোষাক বিতরণ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে ২৬ জন এতিমকে পায়জামা, পাঞ্জাবি ও টুপি প্রদান করা হয়। এছাড়া, প্রায় ২০০ এতিম ও গরিব মানুষ আমন্ত্রিত ছিলেন। 

প্রবাসী জহিরুল ইসলামের ভাই শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাতিজি জারার তৃতীয় জন্মদিন উপলক্ষে গরিব ও এতিমদের জন্য খাবার এবং পোশাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু কেক কেটে এবং রঙ-বেরঙের বেলুন ও মোমবাতি জ্বালিয়ে জন্মদিন পালন না করে আমরা প্রতিবছর এমন আয়োজন করে আসছি। কারণ কেক কাটার আয়োজন আমাদের মাঝে অর্থহীন মনে হয়। গরিব ও এতিমদের পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানে আমাদের পাড়া-প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনও এসেছিলেন। তবে কোনো গিফট বা উপহার আনা নিষেধ ছিল।’

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পিরোলী হাবিবুল আলম বীর প্রতীক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহমুদুল হক আবু জাফর, সমাজকর্মী গোলাম মোরশেদ শেখ, প্রভাষক আলমগীর হোসেন শিকদার, আনোয়ার হোসেনসহ স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে আমেরিকা প্রবাসী জহিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘কেক কেটে ও বেলুন দিয়ে সাজিয়ে অর্থের অপচয় করে জন্মদিন পালন করার মধ্যে কোনো স্বার্থকতা দেখি না। তাই এমন আয়োজন করেছি। গরিব ও এতিমদের পাশে দাঁড়াতে পারলে নিজেদের ধন্য মনে হয়। ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখব ইনশাল্লাহ।’

এ ব্যাপারে এতিম শিশু ইমন শিকদার (১১) ও ইনছান (১০) জানায়, তাদের মাদরাসা থেকে ১৪ জন এতিম জন্মদিনের এ অনুষ্ঠানে এসেছে। খাবার ও পোশাক পেয়ে তারা আনন্দিত। 

পিরোলী শামসুল উলুম রোকাইয়া মহিলা কওমী মাদরাসার সুপার মুফতি ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘জহিরুল ইসলাম তার মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে এতিমদের উন্নতমানের খাবার ও পোশাকের ব্যবস্থা করেছেন। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এ ধরণের ভালো কাজ অন্যদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ যোগাবে।’

এআই/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি