ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার চেষ্টা 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০০:১২, ২২ জুলাই ২০২০

ঠাকুরগাঁওয়ে যৌতুকের জন্য মৌসুমী আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুড়বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গত চারদিন ধরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই গৃহবধূ।

নির্যাতিত গৃহবধূ মৌসুমী জানান, পাঁচ বছর আগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া মন্ডুলাদাম এলাকার আইযুব আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেনের সাথে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আনোয়ার যৌতুকের দাবি করে আসলে মৌসুমীর বাবা সামান্য জায়গা জমি বিক্রি করে শ্বশুর নজরুল ইসলাম ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা তাকে প্রদান করে। এরপর কিছুদিন সংসার ভালোভাবে চললে এক পুত্র সন্তানের আগমন ঘটে। পুনরায় আনোয়ার হোসেন যৌতুক বাবদ তার স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা এনে দিতে আবার চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু মৌসুমী এতে রাজি না হলে প্রায় সময় বেধড়ক মারধর করে।

গত শুক্রবার আনোয়ার হোসেন ও তার মা আলেমা গৃহবধূ মৌসুমীকে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে আবার চাপ প্রয়োগ করে এবং এতে ওই গৃহবধু রাজি না হলে বেধরক মারধরসহ অমানবিক শারীরিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে মৌসুমী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এসময় আনোয়ার ও তার মা মৌসুমীকে হত্যার জন্য মুখে তার মুখে কীটনাশক বিষ ঢেলে দেয়। প্রায় ঘন্টা খানেক পর প্রতিবেশীরা ঘটনাটি বুঝতে পেরে মৌসুমীকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী আটোযারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। 

এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌসুমীর পেট থেকে বিষ বের করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল রের্ফাড করেন।গৃহবধূর বাবা নজরুল ইসলাম কাঁদতে কাঁদতে বলেন,আমি অনেক গরীব মানুষ। বারবার জামাইয়ের চাহিদা মেটানোর সামর্থ্য আমার নেই। তাই তারা সব সময় আমার মেয়েকে মারধর করত। অনেক বুঝিয়ে লাভ হয়নি এবার হত্যা চেষ্টা করেছে। উপায় না পেয়ে এবার থানায় মামলার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

নির্যাতনকারী আনোয়ার হোসেনের মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সূত্রে চেষ্টা করেও সেই পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

ইউপি চেয়ারম্যান অনিল কুমার সেন বলেন,গৃহবধূ নির্যাতিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। এর আগেও অনেকবার স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের বোঝানো যায়নি। অবশ্যই এটা অনেক বড় অপরাধ। তাই এবার নির্যাতিত পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কেআই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি