প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর পরদিনই লাশ হলো নববধূ
প্রকাশিত : ২২:১০, ১০ আগস্ট ২০২০
![](https://www.ekushey-tv.com/media/imgAll/2020June/b-baria-2008101610.jpg)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রেম করে বিয়ে করে প্রেমিকের সাথে পালিয়ে বিয়ে করার একদিন পরই লাশ হতে হলো নববধূ সামছুন্নাহার আক্তার পিংকিকে (২০)। রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে স্বামী মুক্তারের (২৪) এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পিংকির চাচা আবদুন নূর বাদি হয়ে সোমবার (১০ আগস্ট) স্বামী মুক্তারসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মুক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পিংকির বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বনগ্রাম গ্রামে। সে বনগ্রামের আবদুস সালামের মেয়ে। পিংকি হবিগঞ্জের একটি কলেজ থেকে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, সরাইল উপজেলার বেপারী পাড়ার নছর মিয়ার ছেলে মুক্তার দীর্ঘদিন ধরে হবিগঞ্জ জেলা সদরে ফার্নিচারের দোকানে নকশা মিস্ত্রীর কাজ করতো। চার বছর আগে মুক্তার বিয়ে করে। তার আড়াই বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
গত কয়েকমাস আগে মুক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেম হয় কলেজছাত্রী পিংকির। মুক্তার নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে পিংকির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত শনিবার ভোরে পিংকি প্রেমিক মুক্তারের সঙ্গে পালিয়ে আসে। এর আগে তারা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে গিয়ে ৫ লাখ টাকা মোহরানায় বিয়েও করে।
মুক্তার পিংকিকে নিয়ে যায় সরাইলের বড্ডা পাড়ায় তার বড় ভাই নজরুল ইসলামের শ্বশুর বাড়িতে। রোববার (৯ আগস্ট) সকালে পিংকি জানতে পারে মুক্তার বিবাহিত ও তার একটি ছেলেও আছে। এতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে সে।
রোববার দুপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে পিংকি আত্মহত্যা করে। পিংকিকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় মুক্তার। কর্তব্যরত চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে পিংকির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে ও স্বামী মুক্তারকে গ্রেপ্তার করেন। সোমবার পিংকির চাচা আব্দুন নূর বাদী হয়ে মুক্তার হোসেন, তার বড় ভাই আক্তার হোসেন(২৬) ও ভাবী মুন্নি বেগমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনকে আসামি করে সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পিংকির চাচা আব্দুন নূর বলেন, তথ্য গোপন করে পিংকির সাথে প্রেম ও ফুসলিয়ে তাকে বিয়ে করে মুক্তার। মুক্তারের স্ত্রী-সন্তানের খবর জেনে ক্ষোভে লজ্জায় ও আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে পিংকি। পিংকির মৃত্যুর জন্য মুক্তার ও তার পরিবারের অন্য সদস্য ও তাদেরকে আশ্রয়দাতারাই দায়ী। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ মঞ্জুর আহমেদ বলেন, প্রথম বিয়ের বিষয় গোপন করে পিংকির সাথে প্রেম ও তাকে বিয়ে করেছে মুক্তার। পরে মনের দুঃখে আত্মহত্যা করেছে পিংকি।
এনএস/
আরও পড়ুন