ঢাকা, শনিবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা, ভণ্ড পীরসহ গ্রেপ্তার ৩

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:৪৫, ৩ মে ২০২১

Ekushey Television Ltd.

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রামের একটি ভণ্ড পীরের আশ্রমে মুক্তা মালা (৩২) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় আশ্রমের ভণ্ড পীরসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (২ মে) রাত ১১টায় এরশাদপুর গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। ওই রাতে বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত গৃহবধূ মুক্তা মালার বাবা। গ্রেফতারকৃতদেরকে আজ সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রামের ইছাহক আলীর ছেলে জহুরুল ইসলাম (৩৫), তার মা জহুরা বেগম (৫০) ও মৃত মুনছুর আলীর ছেলে ভণ্ড পীর সালাউদ্দীন ওরফে পান্টু হুজুর।

এর আগেও ইসলাম ধর্মকে বিকৃত করা, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করাসহ একাধিক অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়া ফুঁসলিয়ে অন্যের স্ত্রী, যুবতীদের নিজের আখড়ায় রাখা, যুবতীদের নিয়ে এসে গানের আসর বসানো, রোগ চিকিৎসার নামে প্রতারণার নানা অভিযোগেও গ্রেফতার হয় সে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বাথানপাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। লোকমুখে শুনে মেয়ে মুক্তা মালাকে নিয়ে তিনি আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রামের ভণ্ড পীর পান্টু হুজুরের আশ্রমে যান চিকিৎসা নিতে। এক পর্যায়ে পান্টু হুজুরের খাদেম জহুরুল ইসলামের সাথে মুক্তা মালার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। গত ৬-৭ মাস আগে তারা বিয়েও করেন। 

বিয়ের পর থেকে মুক্তা মালা তার স্বামীর সাথে পান্টু হুজুরের আশ্রমেই থাকতেন। বিয়ের পর থেকেই জহুরুলের মা জহুরা বেগম পুত্রবধূ মুক্তা মালাকে মেনে নেননি। তিনি তাকে নানা অত্যাচার করতেন, ঠিক মতো খেতে দিতেন না। ঘরের ভেতর আটকে রাখতেন। 

পুত্রবধূ মুক্তা মালার ব্যাপারে তিনি তার ছেলে জহুরুল ও পান্টু হুজুরকে ফুঁসলাতেন। তারা সবাই মিলে মুক্তা মালার ওপর অমানসিক অত্যাচার করতো। এক পর্যায়ে গত রোববার সকাল ৮টার দিকে মুক্তা মালাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা। পরে মৃতদেহের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে পান্টু হুজুরের ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়। 

কয়েক ঘণ্টা পর দরবারের নিজস্ব ভ্যানে মুক্তা মালার মৃতদেহ তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঘটনাটি কাউকে না বলতে তার বাবাকে হুমকিও দেয়া হয়। পরে দুপুরে মৃতদেহ নিয়ে আলমডাঙ্গা থানায় হাজির হন নিহতের বাবা আব্দুর রশিদ।  

রোববার রাত ১০টার দিকে মুক্তা মালার পিতা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে জহুরুল ইসলাম ও পান্টু হুজুরসহ ৪ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পরে অভিযান চালিয়ে জহুরুল ইসলাম, তার মা জহুরা বেগম ও আশ্রমের ভণ্ড পীর সালাউদ্দীন ওরফে পান্টু হুজুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এএইচ/ এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি