ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মৌলভীবাজারে মসজিদ-মন্দিরে হামলা, মাদকাসক্ত আটক

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:৪৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৪:৪৮, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

আটক সুমন মিয়া

আটক সুমন মিয়া

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক মাদকাসক্তের আচরণে অতিষ্ঠ পুরো গ্রাম। তার উপদ্রবের হাত থেকে বাদ যাচ্ছেনা মসজিদ-মন্দিরও। শনিবার ভোরে এই মাদকাসক্ত শ্রীমঙ্গল দক্ষিণ উত্তরশুর শাহজীর বাজার জামে মসজিদে ঢুকে বন্ধ করে দেয় ফজরের আজান। ভেঙ্গে দিয়েছে দক্ষিণ উত্তরশূর ভৈরব মন্দিরের একটি মূর্তি। এ ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামবাসী ওই মাদকাসক্তকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

আটক মাদকাসক্ত সুমন মিয়া (২৫)। সে দক্ষিণ উত্তরশূর গ্রামের নিজাম মিয়ার ছেলে।

দক্ষিণ উত্তরশুর শাহজীর বাজার জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো: আলী হোসেন জানান, তিনি যখন আজ শনিবার ফজরের আযান শুরু করেন তখন ওই মাদকাসক্ত মসজিদে প্রবেশ করে বকাবকি শুরু করে। এতে তিনি ভয় পেয়ে আজান বন্ধ করে দেন, তখন আজানে ভুলও হচ্ছিল। পরে মসজিদের ইমাম মোরশেদ কামাল জালালী আসলে ওই মাদকাসিক্ত তার উপর চড়াও হয়। 

ইমাম মোরশেদ কামাল জালালী জানান, মাদকাসক্ত সুমন তার সেল ফোনটি নেয়ার জন্য খুব পিঁড়াপিড়ি করে। মোবাইল ফোন না দেয়ায় তার সাথে অসালীন আচরণ করে। পরে সে চলে যায়।

মসজিদের সভাপতি হাজী মো: জসিম উদ্দিন জানান, ফজরের নামাজ পড়তে এসে জানতে পারেন এ ঘটনা। নামাজ পড়ে বাড়ি যাওয়ার পথে তার পথ আটকে মোবাইল ফোন চায় মাদকাসক্ত সুমন। এ সময় তিনি তার কাছে মোবাইল নেই এবং কেন এমন করেছে জানতে চাইলে তার উপর আক্রমণ করে বসে সে। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোক এসে তাকে রক্ষা করে।

এদিকে মসজিদ থেকে ফেরার সময় দক্ষিণ উত্তরশূর ভৈরব মন্দিরে প্রবেশ করে নাট মন্দিরের এক পাশে রাখা বিসর্জন করা স্বরসতি মূর্তির মাথা ভেঙ্গে ফেলে ওই মাদকাসক্ত। মন্দিরের সেবায়েতের স্ত্রী অলি রানী দাশ জানান, এ সময় তার হাতে ধারালো দা ছিলো। ওই দা দিয়ে তাকেও ভয় দেখায়।

মন্দিরের সেবায়েত বন দাশ জানান, ছেলেটা নেশাগ্রস্ত। তার ভয়ে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। তাদের মূর্তি ভাঙ্গার পর তিনি বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীকে অবগত করেছেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় গ্রামবাসী প্রাণতোষ সোম মালু জানান, এই ছেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। এর আগেও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে জেল খেটেছে। জেল থেকে বের হয়ে ফের সে শুরু করে তাণ্ডব। সব সময় তার সাথে হয় দা, না হয় ছোরা থাকে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য দুদু মিয়া জানান, খবর পেয়ে ভোরবেলা তিনি ঘটনাস্থলে যান। মন্দির মসজিদের আক্রমণ ছাড়াও গ্রামের আরও ৮/১০জন মানুষের কাছ থেকে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে চাইছিলো। ফোন না দেয়ায় সকলের সাথে সে খারাপ আচরণ করে। পরে গ্রামবাসী তাকে খুঁজতে বের হয়ে গ্রামের শেষ প্রান্ত থেকে তাকে আটক করে স্থানীয় যুবকরা।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় জানান, এটি সাম্প্রদায়িক কোন ঘটনা নয়। একজন মাদকাসক্ত একই সাথে মসজিদ-মন্দির ও হিন্দু-মুসলিম আনেক মানুষকে উত্যক্ত করে। তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আসাদ জানান, মাদকাসক্ত সুমন এর আগেও অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে। একাধিকবার তাকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি