ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১০:৪৪, ২৩ মার্চ ২০২২

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় মাদ্রাসাছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ গ্রাম থেকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম কালাম হোসেন (২৭)। তিনি শহরের আরামপাড়ার মো. মোবা শেখের ছেলে। 

এর আগে ২০ মার্চ বিকেলে নিজ ঘর থেকে মাসুমা খাতুন (১৮) নামের এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মাসুমা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হকপাড়ার বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের মেয়ে ও চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

সদর থানা পুলিশের একটি দল ২০ মার্চ মধ্যরাতে মাসুমার শোবার ঘর থেকে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করে। তাতে লেখা আছে, ‘কালাম এর কানে আমার মরার খবরটা দিও, তাহলে আব্বারে আর কিছু করবে না।’

সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাসুমা পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার চায়ের দোকান পরিচালনায় সহযোগিতা করতেন। তবে মাসুমা মাদরাসায় যাতায়াতের সময় কালাম তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করতেন। বিবাহিত হওয়ার পরও কালাম মাসুমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। মাসুমার পরিবার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে জানালে কালাম আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে কালাম মাসুমাকে পালিয়ে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। মাসুমা রাজী না হওয়ায় কালাম মাসুমাকে গালিগালাজ করেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৮ মার্চ সকালে মাসুমা দোকানে বসেছিলেন। সকাল আটটার দিকে কালাম সেখানে গিয়ে বিনা কারণে দোকানের একজন ক্রেতাকে মারধর করেন। এ সময় মাসুমা প্রতিবাদ করলে কালাম মাসুমাকেও মারধর করেন। একপর্যায়ে মাসুমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এলে কালাম পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর কালাম হাতুড়ি নিয়ে এসে মাসুমাকে ধাওয়া করেন। এ সময় মাসুমা দৌঁড়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে মাসুমার বাবা আমিনুল ইসলাম সেখানে এসে মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।

এ ঘটনার পর ২০ মার্চ বিকেলে মাসুমার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মাসুমার বাবা বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে কালাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

মামলায় উল্লে­খ করা হয়েছে, নিয়মিত উত্যক্ত ও জনসম্মুখে মারপিটের ঘটনায় লোকলজ্জার ভয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মাসুমা আত্মহত্যা করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, “মাদ্রাসাছাত্রী মাসুমা খাতুনের আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি হলে কালাম এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মুন্সিগঞ্জে মামার বাড়িতে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।”

এ ব্যাপারে বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে। 
এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি