ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪

দাবি মানার আশ্বাসে হলে ফিরলেন খুলনার শিক্ষার্থীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৪, ১৭ আগস্ট ২০২২

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আবাসিক হলের ছাত্রীদের ১১ দফা দাবি মেনে নিয়েছেন হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রায় চার ঘণ্টা বিক্ষোভের পর ছাত্রীদের দাবি মেনে নেওয়া হয়। রাত ২টার দিকে ১১ দফা দাবি সংবলিত নোটিশে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রাধ্যক্ষ বডির সব সদস্য সই করেন। ছাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন অপরাজিতা হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ মাহফুজা খাতুন।

পরে মেনে নেওয়া ১১ দফা দাবি পড়ে শোনান বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সালমা বেগম। এরপর রাত ২টা ৮ মিনিটের দিকে ছাত্রীরা ক্যাম্পাসের হাদী চত্বর ছেড়ে হলে ফিরে যান।

ছাত্রীরা হলে ফিরে যাওয়ার পর অপরাজিতা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রহিমা নুসরাত রিম্মি গণমাধ্যমে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানের মতো। আমরা চাই না, তাদের কোনো কষ্ট হোক। তাদের সবগুলো দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। তারা যে সমস্যাগুলোর কথা বলেছে, সেগুলোও আমরা সমাধান করছি এবং চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সমস্যাগুলো একদিনের নয়। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আজকের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি। দাবিগুলো প্রশাসন মেনে নিয়েছে। দ্রুত এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন


শিক্ষার্থীদের ১১ দফা

>> রাইস কুকার ও রান্নার সরঞ্জাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।

>> যৌন হয়রানির প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও পারিবারিক শিক্ষা তুলে কথা বলার ঘটনায় ক্ষমা চাইতে হবে।

>> হলে প্রয়োজনে অভিভাবক ও নারী আত্মীয়দের থাকার অনুমতি দিতে হবে।

>> পানির পোকা ও খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

>> প্রাধ্যক্ষ তার নিজ ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও অ্যাকাডেমিক বিষয়ে হয়রানি করেন। এটা বন্ধ করতে হবে ও ক্ষমা চাইতে হবে।

>> হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

>> যে কোনো পরিস্থিতিতে সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

>> ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে

>> আজকের আন্দোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো ছাত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেওয়া যাবে না।

>> হলের মিল খাওয়া বাধ্যতামূলক থাকবে না।

>> দাবিগুলো দ্রুত না মানলে প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগ করতে হবে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) অপরাজিতা হলের এক ছাত্রী বটি দিয়ে নিজের গলা কাটার চেষ্টা করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ছাত্রীদের রান্না করার সরঞ্জাম জব্দ করার নির্দেশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস, রাইস কুকার, হিটার এগুলো সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় ছাত্রীদের হলের সিট বাতিলের হুঁশিয়ারি দেয় হল প্রশাসন। এছাড়া কিছুদিন আগে ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৪৫ মিনিট ধরে ধমকানো ও শাসানো হয়।

এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত ১০টার কিছু সময় পরে হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন অপরাজিতা হলের আবাসিক ছাত্রীরা। এসময় তারা হল প্রাধ্যক্ষের বাজে আচরণ ও হুমকিরও প্রতিবাদ জানান। ‘হল আমাদের অধিকার, সুযোগ নয়’, ‘প্রভোস্ট কই, প্রভোস্ট কই, প্রভোস্টকে আসতে হবে’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রীরা।

পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরাও। দুটি আবাসিক হলের ছাত্রীরা প্রথমে অপরাজিতা হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

রাত প্রায় ১২টার দিকে সেখান থেকে মূল ক্যাম্পাসে আসেন তারা। অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে। বিক্ষোভে অংশ নেন অপরাজিতা ও বঙ্গমাতা হলের অন্তত পাঁচ শতাধিক ছাত্রী। মধ্যরাতে ছাত্রীদের বিক্ষোভ-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি