ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মেহেরপুরে দুই ভাইকে হত্যার দায়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:৫৭, ২ এপ্রিল ২০২৩

মেহেরপুরে রফিকুল ইসলাম ও আবুজেল নামের দুই সহোদর হত্যা মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামতের ছেলে হালিম (৩৫), আছের উদ্দীনের ছেলে আতিয়ার (৪০), নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪০), মৃত দবীর উদ্দীনের ছেলে শরিফ (৪০) ও ফরিদ (৪৫), আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দীন (৪৩), আফেল উদ্দীনের ছেলে আজিজুল (৩৬), মুনছারের ছেলে মনি (২৫), নজির উদ্দীনের ছেলে দবির উদ্দীন (৩২)।  

এদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক রয়েছেন। বাকিরা রায় প্রদানের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

বাকি ৫ জন আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকুসর খালাস প্রদান করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজীপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ফেন্সিডিল উদ্ধার করে বিজিবি। বিজিবিকে ফেন্সিডিল ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রফিকুল ইসলাম ও আবুজেলের নামে। এ ঘটনায় ঐ দিন রাতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে মারধর করে অভিযুক্তরা। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রফিকুলকে উদ্ধার করে। 

১৫ জুন রাত ১০টার দিকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ওই দুই ভাইকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। তারপর থেকেই ওই দুইজনের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। এদিন ভোর রাতে কাজীপুর গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত মেইন পিলার ১৪৫ এর সাব পিলারের ৬ এস এর পাশে ওই দুই ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। 

এ ঘটনায় নিহতদের বোন জরিনা বেগম গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় তৎকালীন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানকে। ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তিনি। এ মামলায় তিনজন আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকাক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।

১৭ জনের সাক্ষির সাক্ষ্য শেষে আজ আদালত এই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। 

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কাজী শহীদুল হক ও আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এ.কে.এম শফিকুল আলম, আতাউল গনি আন্টু।  

এ মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী শহীদুল হক। তিনি বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায় নজির হয়ে থাকবে। কারণ মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দীও রয়েছে।

অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী. এ.কে.এম শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চতর আদালতে আপিল করা হবে।
 
এদিকে, রায় ঘোষণার পরপরই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের স্বজনরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি