পঞ্চগড়ে প্রধান শিক্ষক-সভাপতি দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ
প্রকাশিত : ১৪:৪৩, ১ আগস্ট ২০২৩
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দ্বন্দ্বের জের ধরে একাট্টা হয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। গেল সোমবার থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। কোন শিক্ষার্থীও আসছে না বিদ্যালয়টিতে। এদিকে দুই শিক্ষিকার অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে সুশীল সমাজ, অভিভাবক সদস্য এবং বিদ্যালয় কমিটির লোকজন।
ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধনে শতাধিক অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়। ফলে দুই দিন ধরে বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ।
ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের জুগিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার জুগিকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দ্বন্দ্বে গেল সোমবার থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ে আসছেনা কোন শিক্ষার্থীও। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয়দের দাবি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে নিজেদের মত বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসেব দেননা বিদ্যালয়ের পরিচালনার কমিটির সদস্যদেরও। নেই জবাবদিহিতা।
বিদ্যালয়টি নিয়মিত পরিদর্শনে আসেন না ঊর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তাও।
এদিকে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রয়েছে দুটি বিছানা। শিক্ষার্থীদের পুরো সময় পাঠদান না করিয়ে বিদ্যালয়ের ওই কক্ষে রাখা দুটি বিছানায় সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন শিক্ষিকারা। এনিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে হাতে রাখতে নানা উপঢৌকনও দেন অন্য শিক্ষিকারা। ফলে মানসম্মত পাঠদানের অভাবে বিদ্যালয়ে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে ১০১ জন শিক্ষার্থী থাকলেও প্রতিদিন আসেন ১৬ থেকে ২০ জন। প্রধান শিক্ষিকার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিদ্যালয়ে তেমন পড়াশোনা হয়না। তার সঙ্গে যোগসাজসে রয়েছে সহকারী শিক্ষিকা সামছুন নেহার।
এদিকে বিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান নিয়ে অসন্তোষ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও।
এদিকে প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম ও সহকারী শিক্ষক সামসুন নেহারকে অপসারণ করে বিদ্যালয়ে পুরুষ শিক্ষক পদায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা, অভিভাবক সদস্যরাসহ স্থানীয় সুশীল সমাজ।
তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি জানালেন, প্রধান শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে থাকায় কাউকে তোয়াক্কা করছেন না। তার কারণেই বিদ্যালয়ে কমেছে শিক্ষার্থী। এছাড়া বিদ্যালয়ে তিন ধাপে স্লিপের ৯০ হাজার টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকার হিসেব দেখাতে পারলেও বাকী ৪০ হাজার টাকার কোন হিসেব নেই প্রধান শিক্ষিকার কাছে। যা পুরোটাই তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
তবে প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, সভাপতির দাবি করা ৪ হাজার টাকা না দেয়ায় তিনি এসব করছেন। আর স্থানীয়রা ও অভিভাবকেরা সভাপতির সঙ্গে এক হয়ে বাচ্চাদের পাঠাচ্ছেন না। তবে পাশের কক্ষে থাকা বিছানা নিরাপত্তা প্রহরীর বলে জানালেন তিনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানালেন, বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো দ্রুতই সমাধান করা হবে।
এএইচ
আরও পড়ুন