ঢাকা, শুক্রবার   ১০ মে ২০২৪

বসত ঘরে মিললো মা-মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৩২, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নওগাঁ আত্রাই উপজেলার ভোপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জামগ্রামের একটি বসত ঘর থেকে সাবিনা আক্তার (২৬) ও আফরোজা খাতুন (৭) নামে মা-মেয়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

শনিবার দুপুরে দুই মরদেহ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত সাবিনা ওই গ্রামের ভ্যানচালক আরিফুল ইসলামের স্ত্রী ও তার মেয়ে আফরোজা। 

এ মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও গ্রাম্য শালিসের অপমান সইতে না পেরে তারা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে গ্রামবাসীরা ধারণা করছে। 

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, সাবিনার স্বামী আরিফুল ইসলাম বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে এসে ঘরের ভেতর মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশের খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা-মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

ভ্যানচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মতো সকাল ৬টার দিকে ভ্যানগাড়ি নিয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে এসে দেখতে পান ঘরের ভেতর একই রশিতে মা-মেয়ে ঝুলছে। বিষয়টি সাথে সাথে থানায় জানালে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। 

তবে কি কারণে তারা এভাবে আত্মহত্যা করতে পার তার সঠিক কারণ জানাতে না পারলেও ভ্যানচালক আরিফুল বলেন, গত বুধবার বাগানের গাছ ছাগল খাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এসময় প্রতিবেশী লোকজন আমার স্ত্রী-মেয়েকে বেদম মারপিট করে। ওই দিন তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার স্থানীয় ইউপি মেম্বার রুহুল আমিন সোহাগ বিচার সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করা হবে বলে তাদেরকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসেন।

শুক্রবার বিকালে ভোঁপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুহুল আমিন সোহাগের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুর রহমান, রশিদ প্রামাণিক, গ্রাম্য মাতবর হাবিরুল সরদারসহ ৭-৮ জন মিলে বিচার সালিশে বসেন। সালিশ বৈঠকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে গ্রাম্য মাতবররা উল্টো সাবানাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। 

শালিস বৈঠকে ন্যায়বিচার না পেয়ে ক্ষোভে-অপমানে মেয়েকে নিয়ে সাবিনা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন আরিফুল ইসলাম। 

এদিকে গ্রামের মাতবররা বিবাদী পক্ষের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে একতরফা বিচার করার কারণে সাবিনা তার মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে গ্রামবাসীরা দাবি করেছেন।

ইউপি মেম্বার রুহুল আমিন সোহাগ সালিশ বৈঠকের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা সঠিক বিচার করে দিয়েছি সে যদি আত্মহত্যা করে, তাহলে আমাদের কি করার আছে। তবে বিবাদী পক্ষের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি। 

আত্রাই থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত  কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে তাদের মৃত্যুর পেছনে কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।  বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।

এএইচ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি