ঢাকা, শনিবার   ১১ মে ২০২৪

আশুগঞ্জে নিম্নমানের সামগ্রীতে রাস্তা সংস্কারে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৭:১৫, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার একটি সড়কের মাটিমিশ্রিত পাথর আর নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়েই চলছে সংস্কারকাজ। নিম্নমানের কাজের কারণে দফায় দফায় বাধা দিচ্ছেন এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা।

তারপরও কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে অনেকটাই জোর করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিম্নমানের কাজ বন্ধ করতে এরইমধ্যেই প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিন ইউপি চেয়ারম্যান।  অচিরেই নিম্নমানের কাজ বন্ধ করে সিডিউল মতো কাজ না করলে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলনের ডাক দেয়ার কথা জানান চেয়ারম্যানরা। 

গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন, তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু সামা ও আড়াইসিধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিমের লিখিত অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সড়কের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্নের দাবি জানানো হয়। 

অভিযোগের অনুলিপি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও এলজিইডির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলীকেও দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুগঞ্জ উপজেলার আশুগঞ্জ-তালশহর সড়ক দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

সংস্কার কাজের জন্য গত বছরের ১৬ জুন দরপত্রসহ সব আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষ। মেসার্স লোকমান হোসেন অ্যান্ড মোস্তফা কামাল জয়েন্ট ভেঞ্চার কাজটি পায়। তাদের সঙ্গে ৮ কিলোমিটার ওই সড়কের সংস্কারকাজের জন্য ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায় চুক্তি হয়।

চুক্তি মতে, চলতি বছরের জুন মাসে সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে কাজ শুরু হয়। তবে কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। 

শিডিউলে যে মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কথা ছিল ঠিকাদারি দুই প্রতিষ্ঠান তারচেয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এসব বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিম্নমানের ইটের খোয়া, বিটুমিন এবং মাটিমিশ্রিত পাথরসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে চলছে সংস্কারকাজ। ফলে হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সড়কের কার্পেটিং। নিম্নমানের এ কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিনসহ স্থানীয়রা। 

স্থানীয় তাল শহর গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘এ সড়কটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন পর সড়কটি সংস্কার হওয়ার খবরে আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু সড়কটি সংস্কারে যে মানের সামগ্রী ব্যবহারের কথা ছিল সেটি হচ্ছে না। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ চলছে। আমরা বাধা দিলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেটি মানছে না। 

ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা মো. দুলাল মিয়া জানান, ‘সড়কটির কাজ শিডিউল মতো হচ্ছে না। উপরে কিছু পাথর দিয়ে নিচে সব মাটি দিয়ে রাস্তার কাজ করছে। আমরা চাই ভালো সামগ্রী দিয়ে রাস্তাটি যেন মজবুত করে সংস্কার করা হয়।’

আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য হারুনুর রশীদ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বলেন, ‘এই রাস্তাটি দিয়ে তিন ইউনিয়নের মানুষ চলাফেরা করে। অনেক দিন ধরে রাস্তাটি বেহাল অবস্থা ছিল। অনেক কষ্টের পর রাস্তাটির দরপত্র হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন কাজ দেখে মনে হচ্ছে এর চেয়ে নিম্নমানের কাজ আর হতে পারে না। ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার বাজেট হলেও যে কাজ হচ্ছে তাতে দুই কোটি টাকাও লাগবে না।’

এআই/আরকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি