ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪

৩১ জেলায় গ্রীন ভয়েস এর খাদ্যসামগ্রী বিতরণ

হাবিপ্রবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১৮:১৭, ১ মে ২০২০

মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খাদ্য। খাবার না খেয়ে কোন জীবকুলের পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না।সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে চাই সুষম ও পর্যাপ্ত খাবার।একমুঠো খাবারের জন্য প্রয়োজনে মানুষও কখনো কখনো অমানুষ হয়ে উঠে।

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশে দেশে চলছে লকডাউন।ফলে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষজন।কাজ-কর্ম বন্ধ থাকায় অসহায়ত্ব জীবন-যাপন করছে এসব শ্রমজীবি মানুষেরা।একদিকে লকডাউন অন্যদিকে জীবন এই দুইয়ের মাঝে পড়ে সবচেয়ে বিপাকে রয়েছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন। তাঁরা না পারেন কাজে যেতে না পারেন কারো কাছে হাত পাততে।যেন তাঁরা উভয় সংকটে।এসব অসহায় মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রীন ভয়েস। 

সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ অর্থায়নে অসহায় মানুষদের খুজে খুজে বাড়ী বাড়ী গিয়ে খাবার পৌছে দিচ্ছেন গ্রীন ভয়েসের সবুজ বন্ধুরা।জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ভালোবাসার টানে নিস্বার্থভাবে এসব কাজ করছেন তাঁরা।সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের ৩১টি জেলার ১২ শতাধিক পরিবারের মাঝে তৃতীয় দফায় খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেয়া হচ্ছে। খাবারের তালিকায় চাল,চিড়া,আলু,সয়াবিন,তেল,পিঁয়াজ,লবন,মরিচ,গুড়,চিনি,মুড়ি,খেজুর,কালোজিরা,ছোলা এবং নারীদের কথা মাথায় রেখে খাদ্য সামগ্রীর সাথে দেওয়া হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিন।

গ্রীন ভয়েস লালমনিরহাট সরকারি কলেজ শাখার সদস্য রেদোয়ান রাঙ্গা বলেন,যখন খাবার নিযে অসহায় মানুষের পাশে যাই তখন তাদের মুখের হাসি দেখে নিজেকে ধন্য মনে হয়। সব কষ্ট ভুলে যাই। মনের মাঝে গ্রীন ভয়েস এর প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায়। আর ইচ্ছে হয় এভাবে যেন সারাজীবন অসহায় মানুষদের পাশে দাড়াতে পারি।

গ্রীন ভয়েস হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য মাসুমা আক্তার বৃষ্টি জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে আগে কখনো ত্রাণ বিতরণের অভিজ্ঞতা ছিল না। প্রথম যেদিন দিলাম সেদিন সব থেকে বেশি কস্ট গুলো অনুভব করতে পারছি। যখন ত্রাণ তুলে দিচ্ছিলাম তখন কেউ কেউ কেঁদে পর্যন্ত ফেলছিল। কতটা অসহায় হলে মানুষ কেঁদে ফেলে তা বলার ভাষা নেই আমার।ত্রাণ পেয়ে তারা বেশ খুশি হয়েছে!! আসলে এই ভালোলাগার অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করার মত না।ধন্যবাদ গ্রীন ভয়েসকে এমন মহৎ কাজের অংশীদার করার জন্য।   

খাদ্য পেয়ে নাজমা বেগম নামের এক মহিলা বলেন,ভাইরাস আসিয়া হামার কাজ-কাম বন্ধ করি দিছে।কাও হামাক খাবারও দেয় না। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়া কয়দিন থাকি ঠিকমত খাবার পাইনা।প্রতিদিন সকাল হলে চিন্তা শুরু হয় কোটে কোনা খাবার পামো। এগ্লা পায়া (পেয়ে) হামার অনেক উপকার হইল বাহে। এখন পর্যন্ত হামাক কেউ কোনো সাহায্য করে নাই।এখান থাকি সাহায্য পাইলং (পেলাম) যে কয়দিন হোক অন্তত না খায়া থাকা নাগবের নয়।

গ্রীন ভয়েস এর প্রধান সমন্বয়ক আলমগীর কবির জানান,গ্রীন ভয়েস শুধু একটি পরিবেশবাদী যুব সংগঠন-ই নয়।পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করি যেকোন দূর্যোগ বা মহামারী পরিস্থিতে অসহায়-গরীব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশজুড়ে চলা লকডাউনে আঁটকা পড়া অসহায় মানুষদের ঘরে গ্রীন ভয়েস এর পক্ষ থেকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছি। এসব মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারার মধ্যে স্বার্থকতা খুজে পাই। সমাজের কিছু বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এখন পর্যন্ত সারাদেশের ৩১ জেলায় ১২শতাধিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি