ঢাকা, রবিবার   ০৮ জুন ২০২৫

হুন্ডি গিলে খাচ্ছে রেমিট্যান্স (ভিডিও)

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : ১৪:৫৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

হুন্ডি গিলে খাচ্ছে রেমিট্যান্স। এতোদিন রপ্তানির পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি থাকলেও হঠাৎ ছন্দপতন ঘটেছে। গেল আগস্টে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ। যদিও যেকোন সময়ের তুলনায় গত প্রায় দেড় বছরে রেকর্ড সংখ্যক কর্মী কাজ নিয়ে বিদেশি গেছেন। 

অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বেশিরভাগ সূচক নিম্নমুখী থাকলেও এতোদিন রেমিট্যান্স প্রবাহে ভালো গতি ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই নিম্নমুখী ধারায় রেমিট্যান্স।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ২০২২ সালের আগস্টের তুলনায় চলতি আগস্টে রেমিট্যান্স কমেছে ২১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গত বছরের আগস্টে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রায় ২ দশমিক শূণ্য ৪ বিলিয়ন ডলার। 

এদিকে, রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি কমলেও আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিভিন্ন দেশে কর্মী রপ্তানি  বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে বিভিন্ন দেশে গেছেন ৬ লাখ ১৮ হাজার শ্রমিক। আর গত বছর গেছেন রেকর্ড ১১ লাখ ৩৬ হাজার কর্মী। কিন্তু রেমিট্যান্স প্রবাহে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই।  

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুন্ডির কারণে বৈধপথে প্রত্যাশিত রেমিট্যান্স আসছে না। এক্ষেত্রে ডলারের মূল্যকে বড় কারণ বলছেন তারা। গত আগস্ট মাসে ব্যাংকখাতে ডলারের দর ছিল ১০৯ টাকা। সেখানে হুন্ডি কারবারীরা প্রতি ডলার দিচ্ছে কমপক্ষে ১১৫ টাকা। তাই প্রবাসীরা হুন্ডিকেই বেছে নিচ্ছে। 

অর্থনীতিবিদ  ড. এমএস সিদ্দিকী বলেন, “এক ডলারের বিপরীতে যদি ১-৩ টাকা বেশি পায় সেই লোভনীয় প্রস্তাবটা তারা বেছে নিচ্ছে। দ্বিতীয়, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই তাদের মা বা স্ত্রীর কাছে এই টাকা পৌঁছে যায়।”

অর্থনীতিবিদ ড. মনজুর হোসেন বলেন, “এটার সঙ্গে অনেক কিছুই নির্ভর করে, আর্থ-সামাজিক এবং অন্যান্য বিষয়গুলো। রাজনৈতিক বিষয়গুলোও জড়িত থাকে, কোনো অনিশ্চিয়তার কারণ থাকতে পারে।”

প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম হুন্ডির চেয়ে কম হলে রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি ফেরানো কঠিন। তাই বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়াতে প্রবাসীদের জন্য ডলারের দর বাজারভিত্তিক করার পক্ষে মত দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. মনজুর হোসেন বলেন, “হুন্ডি বা কালোবাজার এবং সরকারের যে রেটটা আছে সেটাকে আরও মার্কেটবেইজড বা তারও কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার একটা পদ্ধতি করলে হয়তোবা এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।”

ড. এমএস সিদ্দিকী বলেন, “যতগুলো নিয়মকানুন কাছে সবগুলোই হচ্ছে হুন্ডি মার্কেটে ডলারগুলোকে পুশ করে দেওয়ার মতো। প্রথম আমাদের দেশে বিদেশ থেকে ডলার পাঠালে একধরনের রেট, এক্সপোর্টাররা পাঠালে সেটার আরেক রেট- এই যে চার-পাঁচ রকমের রেট তৈরি করে রেখেছে এই ধরনের অদ্ভুত নিয়ম পৃথিবীর কোথাও নেই।”

হুন্ডি কারবারীদের সনাক্ত ও তাদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি