ঢাকা, বুধবার   ২০ আগস্ট ২০২৫

কুবিতে আইনে না থাকলেও ৩ পদ সৃষ্টি

কুবি সংবাদদাতা :

প্রকাশিত : ১৫:৫৪, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৬:১৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইনে না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সৃষ্টি করা হয়েছে ৩টি পদ বা দায়িত্ব। একাডেমিক বা প্রশাসনিক কার্যক্রমের চেয়ে উপাচার্যের তোষামদে ব্যস্ত এমন শিক্ষকদেরকে অনিয়মতান্ত্রিক এ পদগুলোয় বসানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী সম্প্রতি সৃষ্টি করেছেন এমন কয়েকটি পদ। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা যাচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দীকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাছানকে আইটি উপদেষ্টা এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহবুবুল হক ভুঁইয়াকে গণমাধ্যম উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন উপাচার্য।

গেল বছরের ৮ নভেম্বর রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া হলেও উপদেষ্টারা কি দায়িত্ব পালন করবেন তার সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশনা উল্লেখ নেই। কিন্তু কেন এই দায়িত্ব এবং কি কাজ তাদের? বিষয়টি যেন মরুভূমির মরীচিকার মতই রয়ে গেল। তারা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন বলেও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা মনে করেন।

‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধন আইন ২০১৩’-তে এমন কোনও পদ বা দায়িত্বের হদিস পাওয়া যায়নি। দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়েও এমন কোনও পদ বা দায়িত্বের খবর পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার জন্য রয়েছেন প্রক্টর, আইটি সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য রয়েছে আইটি সেল ও গণমাধ্যম সংক্রান্ত কাজের জন্য রয়েছে জনসংযোগ দফতর।

এ দিকে, এ সব পদ তৈরি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে তাদের ‘হুকুমাত’ বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তারা এ সব দায়িত্বে নিয়োজিতদের (উপাচার্যের কাছের হওয়ায়) খুশি করতে সদা ব্যস্ত থাকেন। নিয়োজিতরা একাডেমিক কাজের চেয়ে উপাচার্যকেই রাজি খুশির জন্য ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ। শিক্ষকরা যদি ক্লাসে পাঠদান ও গবেষণাকে দূরে রেখে এ কাজেই বেশি সময় দেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম গতিহারা হবে এমনটি মনে করেন অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পদ বা দায়িত্বের বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমীর হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তারা বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তারা বলেন, উপাচার্যের অনেক নির্বাহী ক্ষমতা থাকলেও তিনি এ ধরনের পদ সৃষ্টি করতে পারেন না।’

অন্যদিকে, বিভিন্ন সময় সংবাদকর্মীরা উপাচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে বা তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও বক্তব্য না দিয়ে তার নিয়োগকৃত গণমাধ্যম উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে গতি নিয়ে আসার জন্য উপাচার্য এ ধরনের পদ তৈরি করতে পারেন এবং যে কাউকেই এ সব পদে দায়িত্ব দিতে পারেন। সব বিষয় যে আইনে থাকতে হবে এমন কোনও কথা নেই। এ পদগুলো আমরা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করবো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘আমার একার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো সম্ভব না। তাই যে ব্যক্তি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ তাকে সে পদে দায়িত্ব দিয়ে তার থেকে সহযোগিতা নিচ্ছি।’


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি