ঢাকা, মঙ্গলবার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

নবীনদের পদচারণায় মুখরিত হোক স্বপ্নের নোবিপ্রবি

আব্দুর রহিম, নোবিপ্রবি 

প্রকাশিত : ২১:৫১, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

গল্প, আড্ডা, গানে কখনও আবার অভিমানে চলতে শুরু করে নতুন পথচলা। কলেজ জীবন শেষ করার পর সবাই ছুটে চলে স্বপ্ন পূরণে। কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ব্যাংকার অথবা ভিন্ন কিছু হওয়ার স্বপ্নে ভর্তি হয় মেডিকেল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ২০০৬ সালে ২২ জুন নোয়াখালী জেলার মূল শহর মাইজদি থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে সোনাপুর চরজব্বার সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে কাশফুল, বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর, সবুজে ঘেরা পার্ক, হতাশার মোড়, ময়নাদ্বীপ, শিউলিতলা, বকুলতলা,কাপলরোড, লন্ডনরোড এবং নীল দীঘিরপাড় সমারোহে ১০১ একরের সুবিশাল ক্যাম্পাস উপকূলীয় অক্সফোর্ডখ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

মাত্র ৪টি বিভাগ নিয়ে ২৭তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে ছয়টি অনুষদ, দুইটি ইনস্টিটিউট ও ৩০টি বিভাগে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গতিশীল যুগোপযোগী শিক্ষা, বৈচিত্র্যময় বিষয়ের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে এখানকার পাঠ্যসূচি।

কৈশোরে পদার্পণ করা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে ৫টি আবাসিক হল, ১০ তলা বিশিষ্ট ২টি একাডেমিক ভবন, ৪তলা বিশিষ্ট আধুনিক লাইব্রেরি ভবন,অতিথিদের জন্য ৩ তলা বিশিষ্ট ভিআইপি গেস্ট হাউজ। এছাড়া ৫ তলা বিশিষ্ট  অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস ভবন, ৫তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, বৈদ্যুতিক লাইনসসহ ১ হাজার কেবিএ বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট স্থাপন। এছাড়া ৩'শ লাইন বিশিষ্ট বিটিসিএল এর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও ৫শ লাইন ক্ষমতা বিশিষ্ট পিএবিএক্স এক্সচেঞ্জ। 

শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ১১টি বাস, শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ৩টি সিভিলিয়ান বাস, ও ৫টি মাইক্রোবাস এবং ভাড়া ডাবল ডেকার ৮টি বিআরটিসি বাস রয়েছে। নোবিপ্রবি পরিবারের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১টি এ্যাম্বুলেন্স।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পুকুরের সৌন্দর্য-বর্ধনে চারপাশে বৃক্ষরোপণ, দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং চারপাশ বর্ণিল আলোকসজ্জ্বায় সজ্জিতকরণ। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মোবাইল অ্যাপস অ্যান্ড গেইম ডেভেলপমেন্ট ল্যাব এবং একটি নেটওয়ার্কিং ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা সহায়ক বৃত্তি’ চালু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মাঝে ৩০ লাখ টাকার ‘বঙ্গবন্ধু সহায়তা ফান্ড’ ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সেচ্ছাসেবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি,বিএনসিসি,রোভার স্কাউট,নোবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি, মডেল ইউনাইটেড নেশন্স,বিজনেস ক্লাব,ফটোগ্রাফি ক্লাব, ইকো ক্লাব, সিএসটিই ক্লাব, লুমিনারি, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ,শব্দকুটির,অভিযাত্রিক ব্লাড ব্যাংক,এনএসটিইউ ব্লাড ডোনার সোসাইটি, নোবিপ্রবি থিয়েটার, এডভেঞ্চার ক্লাব ইত্যাদি।

এক যুগে পদার্পণ করা এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা,গবেষণা কোন ভাবেই পিছিয়ে নেই। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের রয়েছে দেশ-বিদেশে অনেক অর্জন। এইদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এখন পর্যন্ত দুইটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ কৃর্তিত্বের জন্য ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ ব্যাচের ১১ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর ও ভাইস-চ্যান্সেলর স্বর্ণ পদক প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি অনুষদের চারটি বিভাগের ৫৯৭ জনকে স্নাতক ১১৫ জনকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। ২য় সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের ১০টি স্বর্ণপদক করা হয়। এর মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের ৬ জনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল ও স্নাতকোত্তর ৪ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে ২২৬৩ জন গ্রাজুয়েটকে স্নাতক ডিগ্রি ও ৪৪৫ জনকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ২১৮ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

স্বপ্নভূমির হাসি-খুশি আনন্দ ভালোবাসা একটু ভিন্ন রকম। কখনো পুকুর পাড়ে বসে আড্ডা মাস্তি আবার কখনো ক্যাফেটেরিয়াতে। কখনো দোতলা বাসে বসে অবিরাম গেয়ে যাওয়া গান আবার কখনো ডিপার্টমেন্টের বেঞ্চে বসে তুমুল আড্ডা। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে কিংবা মেসে সহপাঠীদের সঙ্গে কারণে অকারণে হাসিতে মেতে ওঠা আবার কখনো কোনো রেস্টুরেন্টে ধোঁয়া তোলা কফির কাপে চুমুক দিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করা।নবীনদের পদচারণায় মুখরিত হোক ১০১ একরের এই স্বপ্নের নোবিপ্রবি।

কেআই/আরকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি