ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪

রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় সোনিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫২, ১৩ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২০:০২, ১৩ মার্চ ২০১৮

ভারতের রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হচ্ছেন সোনিয়া গান্ধী। গত বছরের ডিসেম্বরে ছেলে রাহুল গান্ধীর হাতে দলের নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তবে রাহুল নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের একের পর এক ব্যর্থতায় আবার সক্রিয় হতে হচ্ছে সোনিয়াকে।

রাহুল কংগ্রেসের নেতৃত্বে আসার পর হারিয়েছেন হিমাচল প্রদেশ এবং মেঘালয়কে। গুজরাট নির্বাচনে ‘ফেভারিট’ থেকেও জিততে পারেননি সেখানেও। এছাড়াও নাগাল্যান্ড আর ত্রিপুরার নির্বাচনে দলের কোন প্রার্থী একটি আসনেও জয় লাভ করতে পারেননি।

এমনকি ২০১৪ সাল থেকে কংগ্রেসীয় রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন রাহুল। কিন্তু ২০১৪ সালেও যেখানে ভারতের ১৩টি রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার ছিল সেখানে এখন কংগ্রেসের হাতে আছে মাত্র ৩টি রাজ্য। আর ৭টি রাজ্য থেকে বিজেপি’র এখন রাজ্য সংখ্যা ২১টি।

ধারণা করা হচ্ছে, রাহুল গান্ধীর অপরিপক্ক নেতৃত্বের কারণে সোনিয়া গান্ধীকেই আবারও নামতে হচ্ছে রাজনীতির মাঠে।

চলটি মার্চ মাসের শুরুর দিকে ভারতের দৈনিক ইন্ডিয়া ট্যুডে’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোনিয়া তার রাজনীতিতে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমি ফিরে আসছি। আমরা তাদেরকে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে দেব না”।

এদিকে আসন্ন ২০১৯ সালের নির্বাচনকে ঘিরে কাজ করা শুরু করেছেন সোনিয়া গান্ধী। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের ১৭ জন বিরোধী নেতাকে নৈশভোজের জন্য নিমন্ত্রণ করেছেন সোনিয়া। ধারণা করা হচ্ছে আসন্ন নির্বাচনে পদে না থেকেও আবারও কেন্দ্রে থেকে নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। তাই সবাইকে নিয়ে জোট গঠনের চিন্তা করছেন।

সোনিয়ার এ বিশেষ নৈশভোজে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে দেশটির টিআরএস পার্টি প্রধান কে সি রাও, এনসিপি প্রধান শারাদ পাওয়ার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা ব্যানার্জীর মত নেতৃবৃন্দরা।

তৃতীয় জোটের উপাখ্যান

চলমান সংকটের মধ্যেই ভারতে তৃতীয় রাজনৈতিক জোট তৈরির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এনসিপি প্রধান শারাদ পাওয়ার নিজেও ২০১৯ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। চলতি মার্চ মাসের ২৭ আর ২৮ তারিখ এ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

তেলেঙ্গানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং টিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও সম্প্রতি খোলামেলাভাবে তৃতীয় পক্ষের জোট গঠনের কথা বলেছেন। সম্প্রতি এক বক্তব্যে কংগ্রেস এবং বিজেপি এই দুই দলের ছায়া থেকেই বের হয়ে আসার দিকে জোর দিয়েছেন তিনি।

এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ৭০ বছর পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৬৪ বছরই বিজেপি এবং কংগ্রেস আমাদের শাসন করেছে। কিন্তু এত বছর পরেও মানুষ কষ্টে আছে; কোথাও কোথাও খাবারের জল পাচ্ছেন না অনেকে। এখন সময় এসেছে পরিবর্তনের”।

তবে এসব নেতৃবৃন্দ এখনও সোনিয়ার নেতৃত্বে একই ছাতার নিচে আসতে আগ্রহী। ইন্ডিয়া ট্যুডের সহকারি সম্পাদক প্রভাস দত্তের মতে, এসব নেতারা রাহুলের নেতৃত্বের সাথে ঠিক মানিয়ে উঠতে পারছেন না।

রাহুল গান্ধীর সাথে যোগাযোগ করা যায় না; এমন অভিযোগে কংগ্রেস থেকে বের হয়ে বিজেপি’র হয়ে নির্বাচন করেন আসামের মন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। এর আগে ২৩ বছর কংগ্রেসের সাথে যুক্ত ছিলেন ছিলেন শর্মা।   

এছাড়াও ত্রিপুরায় হারের জন্য সরাসরি রাহুলকেই দায়ী করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। মমতা ব্যানার্জীর মতে, ভারতের রাজনীতির জন্য এখনও পরিপক্ক নয় রাহুল গান্ধী

বিহারের লালু প্রসাদের সমর্থনও হারিয়েছেন রাহুল গান্ধী। গত বছরের মে মাসে সোনিয়াকে বিহার সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে লালু প্রসাদ বলেছিলেন, “আপনার আসা উচিত। যদি আপনি আসতে না পারেন তাহলে প্রিয়াংকা গান্ধীকে পাঠাবেন দয়া করে”।

এতসব কারণে সোনিয়া গান্ধীকেই পর্দার আড়ালে থেকে হলেও আবার কংগ্রেসের হাল ধরতে হবে বলেই মনে করছেন ভারতের রাজনৈতিক বোদ্ধারা। সূত্রঃ ইন্ডিয়া ট্যুডে

//এস এইচ এস//

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি