ঢাকা, সোমবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৫

হিটলারের মৃত্যুর খবর যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৬, ২২ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

জার্মান চ্যাঞ্চেলর অ্যাডলফ হিটলারের মৃত্যুর সংবাদ ওই সময়ে আলোড়ন তুলেছিল। বিশেষ করে মিত্র শক্তির দেশগুলোর মানুষের জন্য একটি স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছিল। কারণ হিটলারের মৃত্যু মানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি।

হিটলারের মৃত্যুর সংবাদে যেমন প্রতিক্রিয়া হয়েছিল সেটি ওই সময়ের বিবিসির এক কর্মীর জবানিতে। তিনি কার্ল লেহমান।

১৯৪৫ সালের ১লা মে লন্ডন থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরের রিডিংয়ে নিজের ডেস্কে বসে কাজ করছিলেন কার্ল লেহমান।

সোভিয়েত সেনাবাহিনী বার্লিনের উপকণ্ঠে পৌঁছে গেছে আর জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধও শেষ পর্যায়ে এসে ঠেকেছে।

২৪ বছর বয়সী লেহম্যান রেডিও শুনছিলেন। এ সময় একটি ঘোষণা এলো যে, শ্রোতাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ শোনার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হচ্ছে।

তারা একটি আনুষ্ঠানিক সংগীত বাজিয়ে ঘোষণা দিলো, হিটলার মারা গেছেন।` সেদিনের সেই ঘোষণাটি মনে করে লেহমান বলেন, `তারা বললো, বলশেভিকদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় তিনি চলে গেছেন। খুবই ভারী কণ্ঠে ওই ঘোষণাটি দেয়া হয়েছিল।`

ইহুদিদের ওপর নাৎসি বাহিনীর নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় নয় বছর আগে তিনি এবং তার ছোট ভাই গেয়গকে জার্মানি থেকে ব্রিটেনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাদের বাবা-মা। তাদের বাবা ছিলেন একজন জার্মান ইহুদি।
আমি একেবারে স্বস্তি অনুভব করছিলাম, কারণ হিটলার আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু থেকে বিবিসি মনিটরিংয়ে কাজ করতেন কার্ল লেহম্যান। তার কাজ ছিল জার্মানি এবং তাদের সহযোগী দেশগুলোর রেডিও অনুষ্ঠান শোনা, অনুবাদ করা এবং ব্রিটিশ সরকারকে জানানো।

তিনি বলেন, ব্রিটেনে আমরাই প্রথম বাসিন্দা, যারা হিটলারের মৃত্যুর এই ঘোষণাটি শুনি। পুরো ভবনের লোকজন আনন্দে চিৎকার করছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম, এই ঘোষণাটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এর মানে হলো, জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি।

তবে এরপরে আরো অন্তত ছয়দিন পরে জার্মানি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছিল।

হিটলার আর জীবিত নেই- এটা নিঃসন্দেহ হওয়া গেলেও, অনেক পরে জানা গেছে যে তিনি আসলে আত্মহত্যা করেছেন।

কাল বলেন, যেভাবে চলে গেছেন বলা হয়েছিল, তার মানে যেন তিনি সরাসরি লড়াই মারা গেছেন- যা ছিল বড় একটি মিথ্যা।

তার আত্মহত্যার কথাটি তারা স্বীকার করেনি, কারণ তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই সবকিছু শেষ হয়ে যেতো। তবে জার্মানরা তাদের রেডিওতে মৃত্যুর ঘোষণাটি জানিয়েছিল, যা আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পেরেছিলাম।

ওই ঘোষণায় বার্তা ঘোষক আরো বলেন, উত্তরসূরি হিসাবে কার্ল ডোনিৎজকে মনোনীত করে গেছেন হিটলার।

হিটলারের মৃত্যুর এই ঘোষণাটি দ্রুত অনুবাদ করেন জার্মান মনিটরিং টিমের তত্ত্বাবধায়ক আর্নেস্ট গোমব্রিচ। এক টুকরো কাগজে দ্রুত তিনি সেটি লিখে ফেলেন।

এরপর তিনি লন্ডনের ক্যাবিনেট অফিসে ফোন করে সরকারকে বিষয়টি জানান। বিবিসি নিউজ রুমকেও জানানো হয়। এরপরই সারা বিশ্ব সেই খবরটি ছড়িয়ে দেয়া হয়।

এখন ৯৭ বছর বয়সী কার্ল পরিষ্কার মনে করতে পারেন, ব্রিটেনে পুরো দেশের মানুষ উল্লাস করে উঠেছিল।

সূত্র : বিবিসি।

/এআর /


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি