ঢাকা, রবিবার   ০৬ জুলাই ২০২৫

রাখাইনে নির্যাতনের ভয়ে মুখ লুকিয়ে চলছে রোহিঙ্গারা   

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৭, ২৭ আগস্ট ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বৌদ্ধদের দ্বারা নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। প্রাণ ভয়ে মুখ লুকিয়ে চলাফেরা করছে তারা। এমন কি প্রতিবেশীদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া, বাজার করতে যাওয়া বা প্রকাশ্যে খেলাধুলা করা একেবারেই নিষিদ্ধ তাদের জন্য।  

শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজ পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। অনেকটা খোলা কারাগারে খাঁচার পাখির মতো বন্দি বসবাস করতে হয় রোহিঙ্গা মুসলিমরা।

রোহিঙ্গা নিপীড়নের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে রোববার দ্য গার্ডিয়ান এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রতিনিয়ত বৈষমের শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়। শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজ পাওয়ার অধিকারও তাদের দেওয়া হচ্ছে না।    

এসব কঠিন নিয়মনীতির বেড়াজাল তরুণ রোহিঙ্গাদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ২১ বছর বয়সী কো লুইন (ছদ্মনাম) ও তার নয় বন্ধু কলেজ থেকে পাস করেন । কিন্তু একমাত্র লুইন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। কারণ সে রোহিঙ্গা ও মন গোষ্ঠী দম্পতির সন্তান। এমনকি সে নাগরিক কার্ডও পেয়েছে।

গত বছরের আগস্টে রাখাইনের নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১২ নিরাপত্তা কর্মী নিহত হন। এই ঘটনার জের ধরে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে করে হত্যা, ধর্ষন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে ভয়ে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা।

গার্ডিয়ানকে কো লুইন বলেন, ‘এ খবর শুনে আমি খুব অসহায় বোধ করছিলাম। রোহিঙ্গা বন্ধুদের সাহায্য করার মত কোনো উপায় আমার ছিল না।’ রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য স্বেচ্ছা শিক্ষকতা শুরু করার পরিকল্পনা করে সে। 

বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে না পারা প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গাদের একজন লুইন। বুথিডংয়ের রোহিঙ্গা ছাত্র লু মিন (ছদ্মনাম) বলেন, গত বছরের হামলার পর থেকে অনেক ছাত্র ভয়ে বাড়িতেই রয়ে গেছে। কোনো কোনো সময় তারা পাথর ছুড়ে মারে, কোনো কোনো সময় তারা গুলতি দিয়ে আঘাত করে বা বোতল ছুড়ে মারে। সম্প্রতি সরকারি ব্যবস্থাপনায় রাখাইন রাজ্যে পরিদর্শনে যান জাতিসংঘের মানবাধিকার সমন্বয়ক নুট ওস্টবি বলেন। ‘অনেক গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অনেক গ্রাম একদম ফাঁকা।’

গত বছর থেকে মিয়ানমার সরকার বহু রোহিঙ্গা গ্রাম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং সেখানে যেসব নতুন ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। রোহিঙ্গা নেতা অং কিওয়া মো একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের মধ্যে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারেন না।  

এসব বিধি নিষেধ ও সীমাবদ্ধতা রোহিঙ্গাদের ওপর আগে থেকেই ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে, বিশেষ করে গত ১২ মাসে এগুলো আরও কঠিন হয়েছে। এখন রোহিঙ্গারা বিনা অনুমতিতে রাখাইন রাজ্যেও যেতে পারেন না।

কেআই/এসি 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি