ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

ভার্চুয়াল শুনানিতে আপিল বিভাগে ১০৭৬২ মামলা নিস্পত্তি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৪, ২১ জুন ২০২১

তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে ভার্চুয়ালি দেশের উচ্চ আদালতে বিচার কার্যক্রম চলছে।

সুপ্রিমকোর্টের মুখপাত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, মহামারি করোনাভাইরাস জনিত সংক্রমণ এড়াতে শারীরিক উপস্থিতি ব্যাতিরেকে ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে ১৭ জুন ২০২১ পর্যন্ত ১০ হাজার ৭৬২ টি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে।

তিনি জানান, এর মধ্যে ২০২০ সালের ১৩ জুলাই থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিস্পত্তি হয় ৭ হাজার ১২৫টি মামলা এবং চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত নিস্পত্তি হয় ৩ হাজার ৬৩৭টি মামলা।

গত বছরের ৮ মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার লকডাউন, সাধারণ ছুটি, চলাচলে বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি ঘোষণা দিয়েছিল। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সরকার ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০২০’ জারি করে। গত বছর ৭ মে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদনের পর ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০’জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ জারির পরই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অধঃস্তন আদালতে জামিন সংক্রান্ত আবেদনের নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেয়া হয়। জারি করা হয় সুপ্রিমকোর্ট থেকে প্র্যাকটিস ডাইরেকশন। পাশাপাশি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে চালু করা হয় সুপ্রিমকোর্টের বিচার কার্যক্রমও। 

পরে গত বছর ৯ জুলাই অধ্যাদেশটি ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’ হিসেবে জাতীয় সংসদে পাস হয়। মামলার বিচার,বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত, আপিল শুনানি, সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ ও রায় প্রদানকালে পক্ষগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা প্রদানে প্রণীত হয় এই আইন। বিদ্যমান বাস্তবতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে আইনটি প্রণয়ন করে সরকার।

গত ১৭ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্ট বিভাগে সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার দিয়ে ৫৩টি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। মহামারি করোনাভাইরাস জনিত সংক্রমণ এড়াতে ভার্চুয়াল উপস্থিতিতেই ২০ জুন থেকে হাইকোর্টে এই ৫৩টি বেঞ্চে বিচারকার্য চলছে।

করোনাভাইরাস মহামারি জনিত পরিস্থিতিতে যখন বিভিন্ন সেক্টরে কাজের ক্ষেত্রে স্থবিরতা সৃষ্টি হয় তখন তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বিচার বিভাগে কার্যক্রম শুরু হয়। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিচার কাজ প্রথমে সীমিত পরিসরে শুরু হলেও এখন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ, অধঃস্তন আদালতে বৃহত্তর পরিসরে ভার্চুয়ালি বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ২০ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারিরীক উপস্থিতিতেও অধঃস্তন আদালতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হয়েছে। 

করোনার কারণে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছুই চলছে বিধিনিষেধ মেনে। কিন্তু বন্ধ হয়নি দেশের সর্বোচ্চ ও নিম্ন আদালতে বিচার কার্য। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে চলছে উচ্চ আদালতের কোর্টসমূহ। এতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিচারক ও আইনজীবীরা মামলা পরিচালনায় অংশ নিচ্ছেন। ফলে বজায় থাকছে সামজিক ও শারীরিক দূরত্ব। থাকছে না করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি।

ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করায় আপিল বিভাগে একটি সিভিল মামলায় সিঙ্গাপুর থেকে শুনানিতে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। এসময় তার বিপক্ষের কৌসুলি সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল শুনানি করেন বাংলাদেশ থেকেই। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে এটা সম্ভব হয়েছে। শুধু সিঙ্গাপুর নয় দেশের বাইরে থেকে, বাসা ও চেম্বার থেকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইনজীবীরা আদালতে তার মক্কেলের পক্ষে মামলা পরিচালনায় অংশ নিচ্ছেন।- বাসস

এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি