ঢাকা, শুক্রবার   ১১ অক্টোবর ২০২৪

কিংশুক চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:১৩, ৪ মে ২০২৩ | আপডেট: ২২:৫১, ৪ মে ২০২৩

রাত্রির ছায়া  

তবু তো শান্ত হলো না সমুদ্র!
মন্থিত রক্তে 
অমৃতের সাথে গাঢ় নীল যন্ত্রণা;
ভিজে চলে পাণ্ডুলিপি। 

পলাশ দেখি না আর;
বসন্তের খোঁজে দরজা খুলি 
আর বর্ণসিঁড়ি দিয়ে নেমে যায় 
ভারী হীলের শব্দ -

মেঘের অন্তরাল থেকে 
ঢেলে দাও করপুটে 
বিবর্ণ অমলতাস! 

আহা একটা প্রেমের কবিতা!
চলে যাই, ডাকে যদি। 
অবনীর মতো ছিল না রুদ্ধ দ্বার। 
কড়া নাড়ায় 
তবু নৈঃশব্দ ঝুলিয়ে যায় তালা;
লেখনীতে পড়ে থাকে 
আরেকটা রাত্রির ছায়া।

——————————————-

অসমাপ্ত / কিংশুক চক্রবর্তী 

বাঁধা যায় নি বেড়া। 
সমর্পণের রশিতে অসামাল 
হেঁটে যায় জেয় চোখ। 

পতনমুখীর জাড্যে 
আলোর আর্তনাদ 
শীতের বিকেলে 
নিয়ে আসে ঘনীভূত নীরবতা। 

হামারতিয়ায় 
জানো তুমি, এরিস্টটল 
কেমন শিশির সমাহার 

 শুকনো পাতায়
 ঝরে যায় স্বর্ণালী ক্ষণ!

হেমন্তের কোণে একা অমলতাস 
ডাকে -
ছড়ি টানে বেহালায়। 

যে আগুন সাজিয়েছিল চিতা 
নিভে যায় একদিন। 
হয়তো ওইপাড়েও জেগে ওঠে ঢেউ 
তবু জানি কেন সব 
মাঝপথে 
সমুদ্রে বিলীন!

—————————————-

তমসুকে তবু / কিংশুক চক্রবর্তী 

স্বপ্নাতীত নও। 
নাগালেই ছিলে চাঁদ 
তবু তো আকাশে। 

হাইড্রোজেন 
ভরে দিলে আকাঙ্ক্ষায়,
শরীরী আগুন 
জ্বালিয়েছে অসম্ভবের সমস্ত প্রতিরূপ। 
উৎক্ষেপিত যানে 
ফেলে আসা পৃথিবীতে 
অন্ধকারের জীবাশ্ম যেন ডাইনোসর 
মাড়িয়ে এসেছি কীট ভেবে। 

আগুনে আসেনি বসন্ত;
ছাই 
আজ ধিকি ধিকি জ্বলে। 
কানামাছি ভোরে স্বর্ণালী আভায় 
মিশে গেছে হেমন্ত-রং,
বিষাদেরা 
বুঝি চিনেছে ক্রীড়াঙ্গন। 
না ছুঁই পানির অবগাহন শেষে চাঁদ 
ফিরে গেছে অন্য কোনো দেশে। 

কলাপের অমলতাসে 
শুধু লেগে থাকা আলো 
 পথের ফসল 
রেখে দেয় কক্ষপথে;

তমসুকে তুমি থেকে যাও, আমায়রা! 

——————————————

সংযোগ / কিংশুক চক্রবর্তী   

বন্ধ দরজায় কান পাতি। 
কোথায় পেয়েছিলে এমন সূত্র এডওয়ার্ড 
ঝড় তোলে প্রজাপতি-ডানা!

নিথর পাথরের গায়ে তরঙ্গ মাপি। 
নিশ্চুপ, তবু 
স্মৃতির রিপল ভাঙে পাড়। 
আমাদেরই গড়ে তোলা পাহাড় 
কোনোদিন খুঁজে কি পাবে 
দশরথ মাঁঝি? 

ঢেউ মাঝরাতে 
 যে আবেগে উত্তাল 
সে কি শুধু আমার ই একার?
নাকি ওখানেও অন্ধকুটিরে শূন্যতা 
 পাক দিয়ে ওঠে। 
ব্যাকুলতা ভাঙ্গনেতে খোঁজে 
বিষাদের 
তেমনই পরিসর। 

হিমবাহ জুড়ে থাকে নদী
অহংবোধ 
টাইটানিক হ'লে ডুবে যাবে 
এই ভয়ে
থেকে যাওয়া দূরে। 

কোথাও কি তরঙ্গে খুলে যাবে পথ 
অদৃশ্য সেতুর?
অলকানন্দায় ফের সঙ্গমে 
কখনও কি মিশে যাবো 
অভিপ্রায়ে?


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি