দায়িত্ববান এক ক্যাপ্টেনের চলে যাওয়া
প্রকাশিত : ১৬:৫২, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১

পাঁচ বছর আগেও তার নিপুণ দক্ষতায় প্রাণ বেঁচে গিয়েছিল ১৪৯ জন যাত্রীর। এবারও বাঁচল ১২৪ জনের। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট পুরোই ভিন্ন। এবার যাত্রীরা ফিরলেও নওশাদ ফিরলেন না প্রাণ নিয়ে।
উড়োজাহাজের ককপিট থেকে কফিনবন্দি হয়ে স্বজনের কাছে ফিরেছেন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম। প্রাণচঞ্চল, দায়িত্ববান এই বৈমানিকের এমন ফেরার কথা ছিল না।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিমানের একটি ফ্লাইট তার মরদেহ নিয়ে হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করে।উড়োজাহাজ থেকে তার কফিন অ্যাপ্রোন এলাকায় আনা হলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান সহকর্মীরা। কফিন কাঁধে তুলে নেন তারা।
নওশাদ কত দায়িত্ববান ছিলেন তার প্রমাণ দিয়েছেন নিজের জীবন উৎসর্গ করে। আকাশে যখন মৃত্যু কড়া নাড়ছে দুয়ারে, তখনো দেশাত্মবোধ ও যাত্রীসেবার কথা ভুলে যাননি। জীবনের চেয়েও অনেক সময় দায়িত্ব যে বড় হয়ে উঠে আবারো তিনি তা প্রমাণ করলেন। সুদীর্ঘকাল আকাশপথের যাত্রীদের সেবা দিয়েই জীবন বিসর্জন দিয়ে গেছেন।
প্রায় ত্রিশ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় প্রচণ্ড বুকে ব্যথা নিয়ে সহকর্মীকে সঠিক নির্দেশনা এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে যাওয়া কতটুকু দায়িত্বশীল কর্মী হলে সম্ভব, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
একই রকম দক্ষতায় ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর বেঁচে গিয়েছিলেন ১৪৯ জন যাত্রী।
গত ২৭ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (ফ্লাইট বিজি-০২২) ওমানের মাসকাট থেকে ঢাকায় ফেরার সময় মধ্য আকাশে হার্ট অ্যাটাক হয় ক্যাপ্টেন নওশাদের। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সেকেন্ড পাইলট তাৎক্ষণিকভাবে নাগপুরে জরুরিভিত্তিতে বিমানটি অবতরণ করান। ওই ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন।
অবতরণের পরপরই তাকে নেওয়া হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে। সেখানে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর না ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি।
এই আকাশযোদ্ধা চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে।
নওশাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে আমেরিকাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে থাকে।
মাহতাব মিনহাজ/ সুমন
আরও পড়ুন