ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৫ জুলাই ২০২৫

নানা চ্যালেঞ্জের মুখে এক শিফটের পাঠদান (ভিডিও)

রিয়াজ সুমন, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৬, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১১:৫৮, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিফটের পাঠদান। শিক্ষক ও শ্রেণি কক্ষ সংকটের পাশাপাশি রয়েছে নানান সমস্যা। এছাড়া অনেকেই প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনে আগ্রহী না হওয়ায় ঝরে পড়ার হার বাড়তে পারে, এমনটা মনে করছেন শিক্ষক-অভিভাবকরা।

সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫শ’ ৬৬টি। এরমধ্যে বর্তমানে এক শিফটে পাঠদান দেয়া হচ্ছে ৮ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানে।  

পর্যায়ক্রমে সব বিদ্যালয়ে এক শিফটে পাঠদান চালুর নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। যাতে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও ক্লাসরুম থাকা বিদ্যালয়গুলোতে কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করতে হবে। যেখানে সংকট রয়েছে তার এক কিলোমিটারের মধ্যে থাকা দুই বিদ্যালয়ের একটিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় এবং অপরটিতে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নিতে বলা হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থী ভাগাভাগি করে দূরবর্তী অন্য বিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়া কঠিন বলে মনে করেন শিক্ষক-অভিভাবকরা। এমন পরিস্থিতিতে ক্লাসে উপস্থিতি কমার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার আশঙ্কাও তাদের।

মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, “প্রতিটা গ্রামে ১-২টা করে প্রাইমারী স্কুল। স্কুল বেশি থাকার কারণই হলো শিক্ষার্থীকে যেন দূরে যেতে না হয়। সেই ক্ষেত্রে যদি আরেকটি স্কুলে যেতে হয় তাহলে তো অসুবিধা।”

অভিভাবকরা জানান, এমনিতেই দূর থেকে আসি, যদি আরও দূরে নেয়া হয় তাহলে তো আমাদের জন্য অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে খরচ বেশি পড়ে যাবে, বাচ্চার উপর চাপও বাড়বে।

একটি শিফটে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সকাল ৯টা থেকে একটানা তিনঘণ্টা চলবে ক্লাস। নতুন রুটিনে তাদের টিফিন বিরতি নেই। তাই ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখা নিয়েও ভাবছেন শিক্ষকরা।

শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, “একটা বেবি যদি ওয়ান বা টুতে পড়ে তাহলে ঠিক আছে, সে তিন ঘণ্টা পড়ে চলে গেল। কিন্তু বেবিটা যদি তৃতীয়-পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে তখন তার সময় সাত ঘণ্টা।”

শেরে বাংলা নগর শিশু শিক্ষা সরকারি প্রা. বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আয়েশা আকতার বলেন, “বাচ্চারা সোয়া ৩টা পর্যন্ত যদি স্কুলে থাকে তারা পড়াশুনায় মনোযোগও দিতে পারে না।”

সরকারি ৬৫ হাজার ৫শ’ ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে জাতীয়করণকৃত ২৬ হাজার বিদ্যালয়ে চারজন করে শিক্ষকের পদ রয়েছে। অনেক পুরোনো বিদ্যালয়েও শিক্ষক আছেন চার থেকে পাঁচজন করে। এসব প্রতিষ্ঠানে এক শিফট পরিচালনা সম্ভব নয় বলে মনে করেন শিক্ষকরা।

সহকারি শিক্ষক আয়েশা আকতার বলেন, “শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বাচ্চা অন্য স্কুলে দিতে হবে। কারণ শিক্ষক কম, যদি নতুন নিয়োগে শিক্ষক আসে তাহলে এক শিফটে ক্লাস করানো যাবে।”

যদিও সরকার ইতোমধ্যে সাড়ে ৩৭ হাজার নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ২৬ হাজারই প্রাক-প্রাথমিকে। সেই হিসাবে সাধারণ শাখার শিক্ষক মাত্র ১১ হাজার। আর বছরে অবসরে যাচ্ছেন ৫ হাজারের বেশি শিক্ষক। এ অবস্থায় শিক্ষক সংকট এক শিফট চালুর ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা। 

এদিকে, মুঠোফোনে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, শিগগিরই সংকটগুলোর সমাধান করা হবে।

এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে প্রাথমিকে শিক্ষার মান বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি