ঢাকা, সোমবার   ১৪ জুলাই ২০২৫

ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব বিএনপির

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৮, ১৫ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ২২:১১, ১৫ অক্টোবর ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ইসির কাছে তারা ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকার নিশ্চিত করতে হবে, ভোটের আগে অবশ্যই সংসদ ভেঙে দিতে হবে, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।


আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে পৌনে তিন ঘন্টা সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এমন অবস্থানের কথা জানান ফখরুল। তিনি জানান, সংলাপের পর আগামী নির্বাচন ও আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের বিষয়ে কিছুটা আশাবাদী হয়েছে তার দল।


মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশনের খুব বেশি কিছু করার নেই। তারপরও এই সংলাপের পর বিএনপি কিছুটা আশাবাদী তো বটেই।


মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, সংলাপে আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও তাদের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছে। তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ আয়োজন ও সহায়ক সরকারের যে দাবির কথা তাদের বলেছি, সেই ব্যাপারে কমিশন তাদের ক্ষমতার মধ্য থেকে কিছু করার চেষ্টা করবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।


সংলাপে বিএনপি ২০ দফা দাবি তুলে ধরেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকার নিশ্চিত করতে হবে, ভোটের আগে অবশ্যই সংসদ ভেঙে দিতে হবে, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে তা প্রত্যাহার করতে হবে, গুম–খুন–হয়রানি বন্ধ করতে হবে, ই-ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার করা যাবে না, সব রাজনৈতিক দলকে এখন থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে, সব দলের জন্য এখন থেকে সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরি করতে হবে, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের অন্তত সাত দিন আগে থেকে মোতায়েন করতে হবে, সিইসি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিলে হবে না পুরো ইসি বসে সিদ্ধান্ত নেবে এবং ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে।


সংলাপ শেষে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে যে ২০টি প্রস্তাব দিয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করা, মৃত ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, নির্বাচন কেন্দ্রগুলোর কমিটি বিলুপ্ত করে নির্বাচন কমিশনের আওতায় নতুন কমিটি দেওয়ার মতো বিষয়গুলো।


দলটির অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- সব দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের কার্যকর সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও কারবন্দি নেতাদের মুক্তি, এখন থেকেই রাজনৈতিক দলের সভাসমাবেশসহ সব স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অধিকার নিশ্চিতকরণ, প্রশাসন দলীয় প্রভাবমুক্তকরণ, ইভিএম/ডিভিএম যন্ত্র ব্যবহার না করা, ২০০৮ সালের আগের নির্বাচনি সীমানা পুনর্বহাল, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, প্রবাসী নাগরিকদের ভোটাধিকার দেওয়া, আরপিও সংশোধন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং নির্বাচনের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে নতুন সরকারের দায়িত্বগ্রহণ পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল ক্ষমতাসহ প্রতিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন ইত্যাদি।


ফখরুল জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে সন্তুষ্ট। তিনি বিএনপির প্রস্তাবগুলো ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।


মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপির প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস,  ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌদুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আবদুল হালিম, আবদুর রশিদ সরকার ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
//এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি