ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রশ্ন ফাঁসে ইন্টারনেট নয়; মানুষই দায়ী: জব্বার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, “ইন্টারনেট প্রশ্নপত্র ফাঁস করে না, করে মানুষ। প্রশ্ন ফাঁসে মানুষই জড়িত, মানুষই দায়ী”। পরীক্ষা নেওয়ার প্রাচীন পদ্ধতি ডিজিটাল যুগে অচল হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন মোস্তাফা জব্বার।

আজ বুধবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মোস্তাফা জব্বার। এদিন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা- ২০১৮’ উপলক্ষে ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম, ডাটাকার্ড প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবহনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ডাক বিভাগের একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয় এ অনুষ্ঠানে।

ফাঁস হওয়া প্রশ্নগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাহলে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরা সম্ভব কী না-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “প্রশ্ন ফাঁস কেমন করে হয় এবং এগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন। আমাদের দিক থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট করা দরকার তা হলো, প্রচলিত যে পদ্ধতিতে আমরা পরীক্ষা গ্রহণ করি, প্রশ্ন যেভাবে প্রস্তুত করি, প্রশ্ন প্রস্তুত করা থেকে পরীক্ষার্থী পর্যন্ত যেভাবে পৌঁছায়; প্রক্রিয়াটি এমন যে এতসব মানুষ এত স্তরে যুক্ত আছেন, এটি যে কারো জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ। পুরো প্রক্রিয়াটির মধ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বিধান করা দরকার। এটা সত্যি দুরুহ একটি কাজ।’

এসময় ফেসবুকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা জন্ম নিয়েছিল যে, ফেসবুকে প্রশ্ন ফাঁস হয়। আমরা ভাবতাম ইন্টারনেট প্রশ্ন ফাঁস করে। বিষয়টি খুব সহজ, না ফেসবুক, না ইন্টারনেট, না হোয়াটস অ্যাপ প্রশ্ন ফাঁস করে। প্রশ্ন ফাঁস হয় মানুষের হাতে”।

এসময় পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “তথ্য প্রচারের দায়টা যদি প্রযুক্তির ঘাড়ে দিতে চান তবে তাকে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বস্তুত পক্ষে আমি বিশ্বাস করি, যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়, যে পদ্ধতিতে প্রশ্ন তৈরি হয়, যে পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের চেষ্টা হয়, আমার মনে হয় সেটা নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। আমরা যদি নতুন করে না ভাবি তবে শত শত বছরের প্রাচীন পদ্ধতি ডিজিটাল যুগে অচল হতে পারে।’

এসময় ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে সেই উপায় বাস্তবায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করেন মন্ত্রী জব্বার।

তাহলে কি প্রশ্ন ফাঁস রোধে কিছুই করার নেই- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এখন যে মুহূর্তের মধ্যে আছি, সেই মুহূর্তে যে ধরনের প্রযুক্তিগুলো আমাদের হাতে থাকা দরকার সেই প্রযুক্তিগুলো; যেমন ধরুন যিনি ফেসবুক থেকে প্রশ্ন ফাঁস করেছেন তার আইপি অ্যাড্রেস পেতে আমার ফেসবুক থেকে তথ্য পাওয়া দরকার। আমাদের যদি ফেসবুকের সঙ্গে সরাসরি এমওইউ না থাকে, যদিও ইতোমধ্যে ফেসবুকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে, কিন্তু ওই অ্যাড্রেস পেতে আমাদের যে সময় লাগবে ওই সময়টুকুর মধ্যে আমার ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে যায়। সমস্যাটা হচ্ছে সেই জায়গায়।’

তবে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো কাজ করছে উল্লেখ্য করে বলেন, ‘আমরা তিনদিক থেকে কাজ করছি। আমাদের বিটিআরসি কাজ করছে, আইসিটি ডিভিশন কাজ করছে, পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। এর মধ্যে একটা সমন্বয় গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। যে সমস্যাটা, সেটা যাতে প্রকৃত সমাধানের জায়গায় পৌছায় তার জন্যই কাজ করছি। শুধু প্রশ্ন ফাঁসের বিষয় নয়, বস্তুত পক্ষে আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে নিরাপদ করা।’

ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম, ডাটাকার্ড প্রকাশ

‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা- ২০১৮’ উপলক্ষে ১০ ও ৫ টাকা মূল্যমানের দুটি স্মারক ডাকটিকিট, ৫ টাকা মূল্যমানের একটি স্যুভেনির শিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম ও ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ড প্রকাশ করেন মোস্তাফা জব্বার।

জাতীয় পরিচয় পত্র পরিবহনে সমঝোতা স্মারক

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পরিবহনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ডাক বিভাগের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর (এমওইউ) হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাঈদুল ইসলাম ও ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মণ্ডল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কমিশন অফিসে পৌঁছে দেবে ডাক বিভাগ ।

//এস এইচ এস//টিকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি