ঢাকা, শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪

কফি আনানের মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৮, ১৯ আগস্ট ২০১৮

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। শনিবার তার মৃত্যুর পর টুইটার ও বিবৃতির মাধ্যমে শোক জানান বর্তমান মহাসচিব অ্যান্থনিও গুয়েতেরেস, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মেসহ অনেকে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুয়েতেরেস কফি আনানকে ‘শুভশক্তির পথপ্রদর্শক হিসেবে উল্লেখ করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘অনেকদিক দিয়েই কফি আনান নিজেই জাতিসংঘ ছিলেন। কর্মী হিসেবে যোগদান করে তিনিই একসময় এই সংস্থার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সততা ও ইচ্ছাশক্তির কোনো তুলনা হয় না। তিনি সুযোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে জাতিসংঘকে মর্যাদাবান করেছেন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, কফি আনান সবসময়ই একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য লড়াই করেছেন। তিনি বলেন, সব প্রতিবন্ধকতা ভেঙে ফেলেছিলেন কফি আনান। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবীর জন্য কখনোই লড়াই থামাননি। তিনি একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী উপহার দিয়েছিলেন।

আর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে ‘অসাধারণ ব্যক্তিত্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘কফি আনান সর্বদাই রুশদের হৃদয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে টুইটে লিখেন, কফি আনানের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি খুবই ব্যাথিত। তিনি জাতিসংঘের সত্যিকারের সংস্কারক ছিলেন। তিনি একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে সারাজীবন কাজ করে গেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিশ্ব শুধু একজন আফ্রিকান নেতাই হারালো না বরং আন্তর্জাতিক শান্তির এক নিরলস যোদ্ধাকে হারালো।

জাতিসংঘের মানবাদিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জায়েদ রাদ আল হুসেন এক টুইটবার্তায় বলেন, তিনি আনানের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তার মতো ব্যাক্তিত্ব হয় না।

জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা টুইটারে লিখেছে, আজ আমরা এক মহৎ প্রাণ, নেতা ও স্বপ্নদর্শী মানুষ জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানকে হারানোয় শোকাচ্ছন্ন।

কফি আনান ফাউনন্ডেশন এক বিবৃতিতে তাকে বিশ্ব-কূটনীতির সফল ব্যক্তি ও গভীর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আন্তর্জাতিকতাবাদী আখ্যা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়পরায়ন বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় জীবনভর সংগ্রাম করেছেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যেখানেই দুর্ভোগ বা মানবিক আর্তি, সেখানেই ছুটে গেছেন তিনি। গভীর সমবেদনা ও সমানুভূতিতে হৃদয় ছুঁয়েছেন বহু মানুষের। নিজের বদলে অন্যদের কথাই আগে ভেবেছেন তিনি, যা করেছেন তার সবকিছুই দ্যুতি ছড়িয়েছে সত্যিকারের মমতা, আন্তরিকতা আর মেধার।` 

২০০৭ সালে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক নেতাদের গ্রুপ দ্য এলডারস’র প্রতিষ্ঠা হলে এর সদস্য হন কফি আনান। ২০১৩ সালে ওই গ্রুপের চেয়ারম্যান হন তিনি। ২০০১ সালে জাতিসংঘ এবং কফি আনান যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ সালে মহাসচিবের দায়িত্ব ছাড়ার পর সিরিয়া সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার ৮০ বছর বয়সে থেমে যায় কফি আনানের প্রাণ-স্পন্দন। ১৯৩৮ সালে ঘানায় জন্ম নেওয়া কফি আনান জাতিসংঘের সপ্তম মহাসচিব ছিলেন। প্রথম আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ওই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কর্মী হিসেবে জাতিসংঘে যোগ দিয়ে তিনিই প্রথম সংস্থাটির শীর্ষ পদে আসীন হয়েছিলেন। 

আনান ফাউন্ডেশনের পক্ষে তার দু’জন ঘনিষ্ট সহকারী ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরের একটি হাসপাতালে শনিবার প্রথম প্রহরে মারা যান তিনি। তবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

সূত্র : বিবিসি।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি