ফণীর ছোবলে ৭ জনের প্রাণহানি
প্রকাশিত : ২০:০৪, ৪ মে ২০১৯

ঘূর্ণীঝড় ফণীর আঘাতে সারাদেশে এ পর্যন্ত ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় কয়েক হাজার ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা যায়।
নোয়াখালীতে ঝড়ে নিহত হয়েছে দুই শিশু। এছাড়া পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে চার শতাধিক ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। সুবর্ণচর উপজেলা নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জানান, ভোরের দিকে ঘরচাপা পড়ে চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর আমিনুল হক গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মো. ইসমাইল নিহত হয়। একই সময় চরজব্বর ইউনিয়নে অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ভোলায় ঘরচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন এক নারী। এছাড়া সদর উপজেলায় দুই শতাধিক বাড়িঘর বিধস্ত হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন জানান, শনিবার সকালে দক্ষিণ দিঘলদি এলাকায় ঝড়ে ঘর ভেঙে পড়লে রানী বেগম (৪৫) নামে এই নারী চাপা পড়ে নিহত হন। রানী দক্ষিণ দিঘলদি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার সামসুল হকের স্ত্রী। এদিকে সকালে লালমোহনের কচুয়াখালী চর থেকে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে একটি ট্রলার ডুবে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরে নিহত হয়েছেন এক বৃদ্ধ। আহত হয়েছে ১০ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি। রামগতি উপজেলা র্নিবাহী র্কমর্কতা (ইউএনও) রফিকুল হক বলেন, ঘরচাপায় চরআলগী ইউনিয়নের নেয়ামতপুর এলাকায় বেয়াইবাড়ি বেড়াতে এসে আনোয়ারা বেগম (৭৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন।
ঝড়ে রায়পুর ও রামগতিসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। মেঘনার পানির উচ্চতা চার-পাঁচ ফুট বেড়ে যাওয়ায় জেলার রামগতি, কমলনগর, সদর ও রায়পুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে পটুয়াখালীতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মনসাতলী এলাকায় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী হাবিবুর রহমান মুসুল্লি (২৫) নামে এই তরুণ।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর রহমান বলেন, গাছের ডাল ভেঙে পড়ে আহত হলে হাবিবকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান। হাবিব কুয়াকাটা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ওরকা পল্লীর বাসিন্দা হারুন মুসুল্লির।
অন্যদিকে চাঁদপুরে দেড় শতাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, শিলারচর, খাসকান্দি, মান্দের বাজার গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বহু গাছ-পালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় পাঁচজন আহত হলেও তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ঘরচাপা পড়ে দাদি ও নাতি নিহত হয়েছে। শুক্রবার রাত ৩টার দিক ঘূর্ণিঝড় চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন চরদুয়ানী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরদুয়ানী বান্ধাকাঠি গ্রামের আব্দুল বারেক মোল্লার স্ত্রী নূরজাহান বেগম (৬০) ও তার নাতি জাহিদুল ইসলাম (৮)।
জাহিদুলের বাবা ইব্রাহিম জানান, তারা রাতে চারজন ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রাত ৩টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে একটি গাছ ভেঙে তাদের ঘরের উপর পড়ে। “এ সময় ঘর চাপা পড়ে আমার মা ও ছেলে ঘটনাস্থলে নিহত হয়।” ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী কোনোরকমে বের হয়ে আসেন বলে জানান। বরগুনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, নিহতের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।
আরকে//
আরও পড়ুন