ঢাকা, শুক্রবার   ১০ মে ২০২৪

দুর্যোগ মোকাবেলা

প্রত্যন্ত অঞ্চলে ২০-২৫ মিনিটে পৌঁছাতে প্রস্তুত থাকে বিমানবাহিনী

প্রকাশিত : ১৬:০৪, ৭ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৯:৩৮, ৭ মে ২০১৯

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে নতুন নয়৷ ইতিহাস বিবেচনা করলে বহুবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই দুর্যোগের পূর্বে প্রস্তুতি নিলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়। এছাড়া দুর্যোগের পরে কী করণীয় সে বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হয়। তাই দুর্যোগ মোকাবেলায় বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীও প্রস্তুতি নিয়ে থাকে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ সম্প্রতি আঘাত হেনেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। তবে আল্লাহর রহমতে ফণীর প্রভাবে যে ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি।

সম্প্রতি একুশে টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘একুশের রাত’-এ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এয়ার কমডোর শাহারুল হুদা, বিএসপি, এনডিপি, পিএসসি পরিচালক, এয়ার অপারেশান্স। বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রস্তুতি বিষয়ে জানালেন তিনি।

এয়ার কমডোর শাহারুল হুদা বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রস্তুতি বলতে গেলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সার্বক্ষণিক আকাশ প্রতিরক্ষার কারণে আমরা সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করি। এবং খুবই ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, আমাদের কাজটাই হচ্ছে আবহাওয়া নিয়ে। আমরা আমাদের এয়ারক্রাফট, প্লেন এগুলো একটা মিডিয়ামের ভিতরে পরিচালিত হয়। আমাদের আবহাওয়া পরিদফতর রয়েছে।

সুতরাং নিম্নচাপ যখন অনেক দূরে থাকে, তখনই আমাদের বিমানবাহিনীর যে আবহাওয়াবিদ রয়েছে, তারা এটা পর্যবেক্ষণ করে। এবং আমাদের যে আকাশ প্রতিরক্ষা কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে নরমাল এয়ার অপারেশনের সঙ্গে সঙ্গে তারা এই আবহাওয়ার দিকেও নজর রাখেন। এটা (ফণী) ধীরে ধীরে আরও গভীর নিম্নচাপ হলো। পরবর্তীকালে সাইক্লোন হিসেবে রূপ নিল। তো এটির প্রতিটি স্তরেই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর কিছু স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিউর রয়েছে। তো সে অনুযায়ী প্রাথমিক ধাপে আমরা আমদের নিজস্ব যে মূল্যবান সম্পদ রয়েছে, সেগুলোর একটা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি। এবং সেইসঙ্গে যেহেতু বিমানবাহিনীর বিমানগুলো হচ্ছে একটা দুর্যোগ পরবর্তীকালে অত্যন্ত মূল্যবান সরকারি সম্পদ, যেটা ব্যবহার করা হবে দুর্যোগে যারা আক্রান্ত তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য।

‘আমরা নিজেদেরকে যেমন সংরক্ষণ করছি, সেইসঙ্গে এগুলোও প্রস্তুত রাখতে হয় দুর্যোগ পরবর্তীকালে।’

‘তো এইসব আমরা ধাপে ধাপে আমাদের ওয়ার্নিংয়ের সঙ্গে মিলেয়ে এই কাজগুলো প্রসিডিউর অনুযায়ী করে যাই। এখানে উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ সরকারের একটা অলরেডি এসওডি বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা স্থায়ী নির্দেশাবলী আছে। এবং আপনারা শুনে খুশী হবেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ তারিখেই জাতীয় দুর্যোগ পরিষদের বৈঠকও করে গেছেন। এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এবং গাইডেন্স দিয়েছেন, এই খসড়ায় যে স্থায়ী নির্দেশাবলী সেটার আলোকে যার যা দায়িত্বে রয়েছে, সেগুলো যেন আমরা করি। এটা শুধু ফণীর জন্য না; যে কোনও দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য।’  

এয়ার কমডোর বলেন, এই যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সময়টাতে সরকার প্রধানের তরফ থেকে আমরা যে একটা দিক নির্দেশনা পাই, সেগুলোর আদলেই আমরা বাহিনীরা প্রস্তুত থাকি।

তিনি বলেন, প্রস্তুতির আমাদের যে আভ্যন্তরীণ এরেঞ্জমেন্ট রয়েছে, সেটার সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা এনডিআরসিসি যেটা আমাদের এয়ার কমান্ডার অপারেশান্স সেন্টার তখন এই সংযোগটা ধীরে ধীরে দুর্যোগ মোকাবেলার আদলে আমাদের ডিজাস্টার মেনেজমেন্ট কন্ট্রোল রুম হিসেবে আমরা পরিণত করি। তখন আর স্বাভাবিক এয়ার কমন্ডার অপারেশান্স সেন্টারই শুধু থাকে না সঙ্গে এটার দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বিমানবাহিনীর একটা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে পরিণত হয়।

‘এবার আসি আমদের সক্ষমতার ব্যাপারটা। কারণ এটা অত্যন্ত জরুরি। এটা আমাদের বজায় রাখতে হবে, যাতে দুর্যোগটা হয়ে যাওয়ার পরপরই আমরা আমাদের দুর্যোগের প্রতিকারটা ডেমেজের জন্য সবচেয়ে মিনিমাম রাখতে পারি। আমাদের কাছে যে বিমানগুলো রয়েছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ২০-২৫ মিনিটে গিয়ে ইনিশিয়াল ডেমেজের এসেসমেন্ট বলি আমরা, সেটা করার জন্য প্রস্তুত থাকি।      


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি