ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ জুলাই ২০২৫

অস্ট্রেলিয়া মেয়েদের জন্য কেন বিপজ্জনক?

প্রকাশিত : ১২:৫৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

আয়া মাসারভি।

আয়া মাসারভি।

Ekushey Television Ltd.

গত সপ্তাহে  একুশ বছর বয়সী এক তরুণীর হত্যাকাণ্ডের খবরে দারুণ ধাক্কা খেয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ার মানুষ। তিনি যখন মেলবোর্নে হেঁটে নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন তিনি নিহত হন। ইসরায়েলি আরব এই তরুণীর নাম আয়া মাসারভি।

তার মৃত্যুর ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভ ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়, বিশেষ করে নারী বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে। নিহত এই তরুণীর পরিবার বলছে মাসারভি অস্ট্রেলিয়াকে সব সময় নিরাপদ মনে করতেন এবং সে কারণেই তিনি এখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পড়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন।

তবে তার আগেও আরও কয়েকটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়াতে সাম্প্রতিক সময়েই এবং সেগুলোর ক্ষেত্রেও একই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

অস্ট্রেলিয়াতে প্রতি তিনজন নারীর একজন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন এবং যৌন সহিংসতার শিকার হন প্রতি পাঁচজনে অন্তত একজন।

দেশটির আদিবাসীদের ক্ষেত্রে এ ধরণের সহিংসতার হার আরও অনেক বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি দশজন নারীর একজন সহিংসতার অভিজ্ঞতা পান অপরিচিত কারও দ্বারা।

আর পারিবারিক সহিংসতা দেশটিতে প্রায় নিয়মিত ঘটনা এবং গড়ে প্রতি সপ্তাহে একজন নারী খুন হন তাদের বর্তমান বা সাবেক পুরুষ সঙ্গীর হাতে।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ রুথ ফিলিপস জানান ‘নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা যার সর্বোচ্চ রূপ হলো খুন। কিন্তু এটিই নিয়মিত হচ্ছে। নারীর ঘরেই আহত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিকভাবে। এটি একটি মারাত্মক সমস্যা।

আলোচিত কিছু খুনের ঘটনা বিষয়টিকে জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় নিয়ে এসেছে। মেলবোর্নের একটি এলাকায় কমেডিয়ান ইউরাইডাইস ডিক্সনের হত্যার ঘটনায় বিতর্ক জোরদার হয়েছিলো। এর কয়েক মাসের মাথায় শুধু অক্টোবরেই অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ হারিয়েছে এগারো নারী।

মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ক গবেষক কেলসলি হেগার্টি বলছেন, ‘অনেক সময় নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি পর একটি ঘটতেই থাকে। এবং বাস্তবতা হলো গোপন মহামারীর মতো রয়েছে হয়রানি ও সহিংসতার বিষয়গুলো।’

এর আগে ২০১২ সালে আইরিশ নারী জিল মিয়াগের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলো। এখন আবার সেই একই প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে আয়া মাসারভির মৃত্যুর ঘটনায়।

জি-২০ জাতিসমূহের মধ্যে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান অষ্টম। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সরকার নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা কমিয়ে আনতে একটি নীতি প্রণয়ন করে।

তারপরেও গবেষক ফিলিপ ও অন্যরা বলছেন যে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা তাই বিষয়টির ওপর আরও জোর দেওয়ার দাবি করছেন।

দেশটি যৌন বৈষম্য বিষয়ক কমিশনার কেট জেনকিনস বলেছেন, ‘আমরা সহিংসতা কমিয়ে আনতে পারবো তখন যখন নারীরা শুধু নিরাপদই বোধ করবেনা বরং তারা যখন একই সাথে সম্মানও পাবেন।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি